ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের অদূরে বাংলাদেশি নিজস্ব বিহার ‘কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (২ ০ অক্টোবর) বিকেলে দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব বিহারের নিকটবর্তী সালন দো সাবরিনা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন সকালে ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এ উৎসব শুরু হয়। এটা ছিল ফ্রান্সে প্রথম দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান।
দানোত্তম কঠিন চীবর দান উপলক্ষে ভোর থেকে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে শীলগ্রহণ, বুদ্ধপূজা, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কল্পতরু দান, সবশেষ বহু আকাঙ্ক্ষিত কঠিন চীবর দানসহ নানা আয়োজনে সমৃদ্ধ ছিল।
সকালে নিজস্ব বিহারে অষ্টপরিষ্কারসহ সংঘদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফ্রান্স বুদ্ধগয়া প্রজ্ঞাবিহারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ভদন্ত প্রজ্ঞাবংশ মহাথের, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সেন্টারের অধ্যক্ষ ভদন্ত চন্দ্রারত্না মহাথের। প্রধান ধর্মালোচক,হিসেবে ড. বরসম্বোধি মহাথের, উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত জ্যোতিসার ভিক্ষু।
বিকেলে বিহারের নিকটবর্তী সালন দো সাবরিনা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কঠিন চীবর দানসভাফ্রান্স বুদ্ধগয়া প্রজ্ঞাবিহার ধ্যান কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ পণ্ডিত ভদন্ত প্রজ্ঞাবংশ মহাথের’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সেন্টারের অধ্যক্ষ ভদন্ত চন্দ্রারত্না মহাথের। প্রধান ধর্মালোচক ফ্রান্স বিশ্ব শান্তি ধ্যানকেন্দ্রের অধ্যক্ষ বিদ্যাবারিধী ড. বরসম্বোধি মহাথের, উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ফ্রান্স কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ভদন্ত জ্যোতিসার ভিক্ষু।
উপস্থিত ছিলেন ভদন্ত বিজয়ানন্দ ভিক্ষু,ভদন্ত কল্যাণরত্ন থের,ভদন্ত শাক্যবংশ থের,ভদন্ত সুগতশ্রী থের, ভদন্ত বুদ্ধপ্রিয় ভিক্ষু ,ভদন্ত প্রিয়রত্ন ভিক্ষু , সংঘা্মিত্র ভিক্ষুনি সহ বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা উপস্থিত ছিলেন।
শমিষ্ঠা বড়ুয়া ববির ও প্রমথ বড়ুয়ার সঞ্চালনায় মংগলাচরণ করেন ভদন্ত মার্গ রক্ষিত ভিক্ষু পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন সুধীর বড়ুয়া , ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সুমেষ বড়ুয়া।
বক্তারা বলেন, চীবর দান ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বৌদ্ধদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দান জন্ম-জন্মান্তরে সুফল প্রদায়ী। প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে বছরে একবার চীবর দান করা হয়। এদিন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ গৃহীরা ভিক্ষু সংঘকে চীবর দান করেন। ভিক্ষু সংঘও তাদের বিনয়-বিধানের সব নিয়ম অক্ষুণ্ন রেখে পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে এ চীবর গ্রহণ ও ব্যবহার করে। কঠিন চীবর দানের বহুধা গুণের কথা স্মরণে রেখে প্রত্যেক বৌদ্ধ জীবনে অন্তত একবার হলেও চীবর দান করার মানসিকতা পোষণ করেন।
অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে বসবাসরত কয়েকটি দেশের নাগরিকেরা এ উৎসবে অংশ নেন।
সবশেষে রণজিৎ বড়ুয়ার পরিচালনায় অনুপম বড়ুয়ার সঞ্চালনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। তবলায় সংগত করেন শাপলু বড়ুয়া চৌধুরী , অক্টোপ্যাডে রবিন চৌধুরী ,কিবো’ড অমি বড়ুয়া।