০৬:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দ্বাদশ সংঘরাজ ড. ধর্মসেন মহাথের’র তৃতীয় প্রয়াণ বার্ষিকী আজ

  • ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট সময় ১২:৫২:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩
  • ৯৯৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার মহামান্য দ্বাদশ সংঘরাজ ড. ধর্মসেন মহাথের’র তৃতীয় প্রয়াণ বার্ষিকী আজ।

তিনি ১৯২৮ সালের ১৭ জুন  চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ঊনাইনপূরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  বাবা মহীরাজ বড়ুয়া এবং মা সুরবালা বড়ুয়া।

তার গৃহী নাম রাখা হয় রসধর বড়ুয়া। কালের ধারাবাহিকতায় রসধর বড়ুয়া  কিশোর বয়সে হঠাৎ জটিল রোগে আক্রান্ত হন। অনেক চিকিৎসার পরও সুস্থ না হলে একপর্যায়ে মা বুদ্ধের প্রতিবিম্বের সামনে একাগ্রমনে ছেলের রোগমুক্তির জন্য প্রার্থনায় ইচ্ছে পোষণ করলেন যে, ছেলে রসধর রোগ থেকে মুক্তি পেলে শাসন সদ্ধর্মে দান করবেন।

অতঃপর রসধর সুস্থ হলে ১৪ বছর বয়সে ১৯৪২ সালে পবিত্র আষাঢ়ী পূর্ণিমায় জ্ঞানতাপস আর্যশ্রাবক ভদন্ত জ্ঞানীশ্বর মহাথেরো মহোদয়ের নিকট প্রব্রজ্যা ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করে ধর্মসেন শ্রামণ নাম ধারণ করেন। গুরুর স্বানিধ্যে শ্রামণ ধর্মসেন ধর্মীয় শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন। অতঃপর ১৯৪৭ সালে ঊনাইনপূরা লংকারামে (বিহার) দানোত্তম শুভ কঠিন চীরব দানানুষ্ঠানে আচারিয়া পূর্ণাচার সীমালয়ে জ্ঞানীশ্বর মহাথেরোর উপাধ্যায়ত্বে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপসম্পদা ( ভিক্ষু ) গ্রহণ করেন।

ভিক্ষুত্ব জীবনে বুদ্ধের সদ্ধর্ম জানার লক্ষ্যে ধর্ম-বিনয় সম্পর্কে অধিকতর জ্ঞান অর্জনে নিজেকে নিয়োজিত রেখে ১৯৫৩ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বৌদ্ধের পবিত্র ধর্মীয় গন্থ ত্রিপিটকের সর্বোচ্চ উপাধি ‘ত্রিপিটক বিশারদ’ ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তাঁর অর্জিত জ্ঞান সমাজ ও সদ্ধর্মে প্রচার ও প্রসারিত করার মানসে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মদেশনার মাধ্যমে বিকশিত করেছেন।

মহামান্য দ্বাদশ সংঘরাজের লিখিত পুস্তক/গ্রন্থ গুলো সমূহ – ত্রিরত্ন বন্দনা ( ১৯৬২ ), বিনয় সংগ্রহ ( ১৯৭৮ ), বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষা ( ১৯৮১ ), ত্রি-মহাজীবন (১৯৯০ ) উল্লেখযোগ্য। মহামান্য দ্বাদশ সংঘরাজ কর্ম জীবনে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সভাপতি সহ বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

একাদশ সংঘরাজ ভদন্ত শাসনশ্রী মহাথেরো মহোদয়ের প্রয়াণের পর ২০০৪ সালে ২৯ শে জানুয়ারি বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সাধারণ সভার ভিক্ষুসংঘের উপস্থিতিদের সর্বসম্মতত্রুমে উপ-সংঘরাজ ভদন্ত ধর্মসেন মহাথেরো মহোদয়কে বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু “সংঘরাজ” পদে অভিসিক্ত করেন।

মহামান্য দ্বাদশ সংঘরাজ ভদন্ত ধর্মসেন মহাথেরো দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে বাংলাদেশি বৌদ্ধদের অবস্থান সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরেছেন। তাঁর মেধা, প্রজ্ঞা ও ধর্মীয় গুনাবলীর স্বীকৃতি স্বরূপ ‘অগ্গমহাসদ্ধম্মজোতিকাধজ'( মিয়ানমার ), ত্রিপিটক সাহিত্য চক্রবর্তী ( শ্রীলংকা ), ওয়ার্ল্ড পিস রোল মডেল ( থাইল্যান্ড ), সুপ্রিম বুড্ডিস্ট লিডার ( জাপান ), কৃপাশরণ এওয়ার্ড (ইন্ডিয়া) ডক্টর ডিগ্রি উপাধি প্রাপ্ত (ভিয়েতনাম) ডক্টর ডিগ্রি উপাধিতে ভূষিত(থাইল্যান্ড) এ্যাওয়ার্ড সহ ‘অতীশ দীপংকর ও বিশুদ্ধানন্দ’ স্বর্ণপদক অর্জন করেন।

তিনি ২০২০ সালের ২১ মার্চ কালগত হন।

শেয়ার করুন
আরও সংবাদ দেখুন

সৈয়দবাড়ী ধর্ম প্রবর্তন বৌদ্ধ বিহার দ্বিতীয় ভবনের দ্বারোদ্‌ঘাটন , কর্মবীর করুণাশ্রী থের’র “মহাথের বরণ” ১৯ , ২০ ডিসেম্বর

You cannot copy content of this page

দ্বাদশ সংঘরাজ ড. ধর্মসেন মহাথের’র তৃতীয় প্রয়াণ বার্ষিকী আজ

আপডেট সময় ১২:৫২:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার মহামান্য দ্বাদশ সংঘরাজ ড. ধর্মসেন মহাথের’র তৃতীয় প্রয়াণ বার্ষিকী আজ।

তিনি ১৯২৮ সালের ১৭ জুন  চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ঊনাইনপূরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  বাবা মহীরাজ বড়ুয়া এবং মা সুরবালা বড়ুয়া।

তার গৃহী নাম রাখা হয় রসধর বড়ুয়া। কালের ধারাবাহিকতায় রসধর বড়ুয়া  কিশোর বয়সে হঠাৎ জটিল রোগে আক্রান্ত হন। অনেক চিকিৎসার পরও সুস্থ না হলে একপর্যায়ে মা বুদ্ধের প্রতিবিম্বের সামনে একাগ্রমনে ছেলের রোগমুক্তির জন্য প্রার্থনায় ইচ্ছে পোষণ করলেন যে, ছেলে রসধর রোগ থেকে মুক্তি পেলে শাসন সদ্ধর্মে দান করবেন।

অতঃপর রসধর সুস্থ হলে ১৪ বছর বয়সে ১৯৪২ সালে পবিত্র আষাঢ়ী পূর্ণিমায় জ্ঞানতাপস আর্যশ্রাবক ভদন্ত জ্ঞানীশ্বর মহাথেরো মহোদয়ের নিকট প্রব্রজ্যা ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করে ধর্মসেন শ্রামণ নাম ধারণ করেন। গুরুর স্বানিধ্যে শ্রামণ ধর্মসেন ধর্মীয় শিক্ষায় মনোনিবেশ করেন। অতঃপর ১৯৪৭ সালে ঊনাইনপূরা লংকারামে (বিহার) দানোত্তম শুভ কঠিন চীরব দানানুষ্ঠানে আচারিয়া পূর্ণাচার সীমালয়ে জ্ঞানীশ্বর মহাথেরোর উপাধ্যায়ত্বে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপসম্পদা ( ভিক্ষু ) গ্রহণ করেন।

ভিক্ষুত্ব জীবনে বুদ্ধের সদ্ধর্ম জানার লক্ষ্যে ধর্ম-বিনয় সম্পর্কে অধিকতর জ্ঞান অর্জনে নিজেকে নিয়োজিত রেখে ১৯৫৩ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বৌদ্ধের পবিত্র ধর্মীয় গন্থ ত্রিপিটকের সর্বোচ্চ উপাধি ‘ত্রিপিটক বিশারদ’ ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তাঁর অর্জিত জ্ঞান সমাজ ও সদ্ধর্মে প্রচার ও প্রসারিত করার মানসে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মদেশনার মাধ্যমে বিকশিত করেছেন।

মহামান্য দ্বাদশ সংঘরাজের লিখিত পুস্তক/গ্রন্থ গুলো সমূহ – ত্রিরত্ন বন্দনা ( ১৯৬২ ), বিনয় সংগ্রহ ( ১৯৭৮ ), বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষা ( ১৯৮১ ), ত্রি-মহাজীবন (১৯৯০ ) উল্লেখযোগ্য। মহামান্য দ্বাদশ সংঘরাজ কর্ম জীবনে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সভাপতি সহ বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

একাদশ সংঘরাজ ভদন্ত শাসনশ্রী মহাথেরো মহোদয়ের প্রয়াণের পর ২০০৪ সালে ২৯ শে জানুয়ারি বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সাধারণ সভার ভিক্ষুসংঘের উপস্থিতিদের সর্বসম্মতত্রুমে উপ-সংঘরাজ ভদন্ত ধর্মসেন মহাথেরো মহোদয়কে বাংলাদেশি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু “সংঘরাজ” পদে অভিসিক্ত করেন।

মহামান্য দ্বাদশ সংঘরাজ ভদন্ত ধর্মসেন মহাথেরো দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে বাংলাদেশি বৌদ্ধদের অবস্থান সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরেছেন। তাঁর মেধা, প্রজ্ঞা ও ধর্মীয় গুনাবলীর স্বীকৃতি স্বরূপ ‘অগ্গমহাসদ্ধম্মজোতিকাধজ'( মিয়ানমার ), ত্রিপিটক সাহিত্য চক্রবর্তী ( শ্রীলংকা ), ওয়ার্ল্ড পিস রোল মডেল ( থাইল্যান্ড ), সুপ্রিম বুড্ডিস্ট লিডার ( জাপান ), কৃপাশরণ এওয়ার্ড (ইন্ডিয়া) ডক্টর ডিগ্রি উপাধি প্রাপ্ত (ভিয়েতনাম) ডক্টর ডিগ্রি উপাধিতে ভূষিত(থাইল্যান্ড) এ্যাওয়ার্ড সহ ‘অতীশ দীপংকর ও বিশুদ্ধানন্দ’ স্বর্ণপদক অর্জন করেন।

তিনি ২০২০ সালের ২১ মার্চ কালগত হন।