০৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারের চৌফলদন্ডীতে বৌদ্ধ বিহারের পথ দখল করে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের চেষ্টা

  • ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট সময় ০৬:২৮:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩
  • ৯১৫ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজারের চৌফলদন্ডীতে শত বছরের বৌদ্ধ বিহারের পথ দখল করে ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে চলছে উত্তেজনা। এতে করে নিরাপত্তাহীনতার কথা বলছেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা।

এনিয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার কথা জানিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী উত্তর রাখাইনপাড়া এলাকায় সাড়ে তিন শত বছরেরও বেশি সময় ধরে ধর্মীয় সম্প্রীতি নিদর্শন হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে ‘সদ্ধম্মসিরি’ নামের বৌদ্ধ বিহার। এর পাশে রয়েছে মেধা বিকাশের আরেক নিদর্শন উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টির ভবন সম্প্রসারণে সরকারিভাবে আলাদা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে প্রশাসন। এই ভবনটি নির্মাণের জমির একটি অংশ পড়েছে বিহারের একমাত্র চলাচলের রাস্তার উপর। ভবনটি নির্মিত হলে বিহারের যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়বে। তাই, ভবন নির্মাণের নকশা পরিবর্তন করে বিহারের পথ অক্ষুন্ন রেখে স্কুল ভবনটি নির্মাণের পক্ষে স্থানীয়রা।

একদিকে বৌদ্ধ বিহার, অন্যদিকে স্কুল। এই দুটি প্রতিষ্ঠান চায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা। কিন্তু, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র স্কুলের নামে জমি ভোগ দখল করার জন্য বৌদ্ধ বিহারের সামনে ভবন নির্মাণের পাঁয়তারা শুরু করে। এনিয়ে স্থানীয় মুসলিম ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় উস্কানী নিয়ে সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে একটি চক্র মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এতে করে রামুর মত আরেকটি ট্রাজেডির আশঙ্কায় কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পৃথক দুটি স্মারকলিপি দিয়েছেন বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি এবং ওই এলাকার রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন।

জানা যায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়টির একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে স্থানীয় প্রশাসন এতেই শুরু হয় বিপত্তি। কারণ, স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রটি পাশের বৌদ্ধ বিহারের চলাচলের একমাত্র পথ বন্ধ করে স্কুলের ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা করলে বিহার পরিচালনা কমিটি বাঁধা দেয়। ফলে শুরু হয় দ্বন্দ্ব।

উত্তর রাখাইনপাড়া ‘সদ্ধম্মসিরি’ বৌদ্ধ বিহারের ভান্তে ভদন্ত শাসন রক্ষিতা বলেন, ‘আমরা চাই বিহার এবং স্কুলের কোনো ক্ষতি না হয়ে ভবন নির্মাণ করা হোক। কিন্তু বিহারের সামনে স্কুল নির্মাণ করলে বিহারের জন্য অসুবিধার সৃষ্টি হবে। এটি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।’

উত্তর রাখাইনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংক্যছা বলেন, ‘নতুন ভবণ বিহারের সামনে হলে স্থানীয়দের অসুবিধার কথা ম্যানেজিং কমিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। তারা এটি দেখেছেন। এখন তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছি।’

এদিকে, রোববার বিদ্যালয় ভবন নিমার্ণকে কেন্দ্র করে রাখাইন সম্প্রদায়ের জানমালের নিরাপত্তা, প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার রক্ষা ও অবৈধ দদখলদারের হাত থেকে স্কুলের জমি উদ্ধারের আবেদন জানিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আরও একটি স্মারকলিপি দিয়েছে বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর  ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্কুলের জমি নিয়ে একটি জটিলতা রয়েছে। পরে উপজেলা প্রকৌশলী, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে, ভবনটির নকশা পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই।’

সুত্র- একুশে টিভি

শেয়ার করুন
আরও সংবাদ দেখুন

প্রজ্ঞা সারথী সংঘের নতুন কমিটি গঠন

কক্সবাজারের চৌফলদন্ডীতে বৌদ্ধ বিহারের পথ দখল করে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের চেষ্টা

আপডেট সময় ০৬:২৮:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল ২০২৩

কক্সবাজারের চৌফলদন্ডীতে শত বছরের বৌদ্ধ বিহারের পথ দখল করে ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে চলছে উত্তেজনা। এতে করে নিরাপত্তাহীনতার কথা বলছেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা।

এনিয়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার কথা জানিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী উত্তর রাখাইনপাড়া এলাকায় সাড়ে তিন শত বছরেরও বেশি সময় ধরে ধর্মীয় সম্প্রীতি নিদর্শন হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে ‘সদ্ধম্মসিরি’ নামের বৌদ্ধ বিহার। এর পাশে রয়েছে মেধা বিকাশের আরেক নিদর্শন উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টির ভবন সম্প্রসারণে সরকারিভাবে আলাদা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে প্রশাসন। এই ভবনটি নির্মাণের জমির একটি অংশ পড়েছে বিহারের একমাত্র চলাচলের রাস্তার উপর। ভবনটি নির্মিত হলে বিহারের যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়বে। তাই, ভবন নির্মাণের নকশা পরিবর্তন করে বিহারের পথ অক্ষুন্ন রেখে স্কুল ভবনটি নির্মাণের পক্ষে স্থানীয়রা।

একদিকে বৌদ্ধ বিহার, অন্যদিকে স্কুল। এই দুটি প্রতিষ্ঠান চায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকেরা। কিন্তু, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র স্কুলের নামে জমি ভোগ দখল করার জন্য বৌদ্ধ বিহারের সামনে ভবন নির্মাণের পাঁয়তারা শুরু করে। এনিয়ে স্থানীয় মুসলিম ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় উস্কানী নিয়ে সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে একটি চক্র মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এতে করে রামুর মত আরেকটি ট্রাজেডির আশঙ্কায় কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পৃথক দুটি স্মারকলিপি দিয়েছেন বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি এবং ওই এলাকার রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন।

জানা যায়, সম্প্রতি বিদ্যালয়টির একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে স্থানীয় প্রশাসন এতেই শুরু হয় বিপত্তি। কারণ, স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রটি পাশের বৌদ্ধ বিহারের চলাচলের একমাত্র পথ বন্ধ করে স্কুলের ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা করলে বিহার পরিচালনা কমিটি বাঁধা দেয়। ফলে শুরু হয় দ্বন্দ্ব।

উত্তর রাখাইনপাড়া ‘সদ্ধম্মসিরি’ বৌদ্ধ বিহারের ভান্তে ভদন্ত শাসন রক্ষিতা বলেন, ‘আমরা চাই বিহার এবং স্কুলের কোনো ক্ষতি না হয়ে ভবন নির্মাণ করা হোক। কিন্তু বিহারের সামনে স্কুল নির্মাণ করলে বিহারের জন্য অসুবিধার সৃষ্টি হবে। এটি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।’

উত্তর রাখাইনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংক্যছা বলেন, ‘নতুন ভবণ বিহারের সামনে হলে স্থানীয়দের অসুবিধার কথা ম্যানেজিং কমিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। তারা এটি দেখেছেন। এখন তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছি।’

এদিকে, রোববার বিদ্যালয় ভবন নিমার্ণকে কেন্দ্র করে রাখাইন সম্প্রদায়ের জানমালের নিরাপত্তা, প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার রক্ষা ও অবৈধ দদখলদারের হাত থেকে স্কুলের জমি উদ্ধারের আবেদন জানিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আরও একটি স্মারকলিপি দিয়েছে বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর  ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্কুলের জমি নিয়ে একটি জটিলতা রয়েছে। পরে উপজেলা প্রকৌশলী, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে, ভবনটির নকশা পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই।’

সুত্র- একুশে টিভি