নিরাপত্তাহীনতার কারণে এবছর দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান আয়োজন না করার সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসতেই তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
গণমাধ্যম থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, সবখানেই ছিল এর চর্চা। এরই মধ্যে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সোমবার সকালেই বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক।
এরপর দুপুরে তার কার্যালয়ে ডাকেন মতবিনিময় সভা। সেখানে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে হয় বিশদ আলোচনা।
ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজন এবছর না করার সিদ্ধান্ত থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সরে আসতে অনুরোধ জানান রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। সেইসঙ্গে তিনি যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাঙ্গামাটিতে কঠিন চীবর দানের উৎসব হবে কিনা, তা এখন নির্ভর করছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ওপর। তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে প্রশাসন।
এর আগে রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে, চলতি বছর কঠিন চীবর দানোৎসব না আয়োজনের সিদ্ধান্তের কথা জানায় পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ।
সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত ও হামলা-হত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দায়ক-দায়িকা ও ভিক্ষু সংঘের মধ্যে আলোচনাক্রমে চলতি বছরে কঠিন চীবর অনুষ্ঠান না করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছি।”
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার সকালে প্রথমে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন জেলা প্রশাসক। সেখানে ভিক্ষুদের দলের নেতৃত্ব দেন ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের।
জেলা প্রশাসক রাঙ্গামাটিতে চীবর দান আয়োজনের জন্য অনুরোধ জানালেও সিদ্ধান্ত দিতে কিছু সময় চেয়ে নেন ভিক্ষুরা।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে শ্রদ্ধালংকার মহাথের সাংবাদিকদের বলেন, “কেবল রাঙ্গামাটি নয়, আমরা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ভিক্ষুদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০২৪ সালের কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান আমরা করব না। রাঙ্গামাটি জেলায় নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হলেও আমরা নিরাপত্তা বিষয়ে সন্দিহান।”
পরে দুপুরে ‘কঠিন চীবর দান ২০২৪’ পালনের বিষয়ে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের পাশাপাশি বিহার সংশ্লিষ্টরা। ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও।