০৮:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামীকাল শোকবহ শুভ মাঘী পূর্ণিমা

  • ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট সময় ০৮:৪৪:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫৮৯ বার পড়া হয়েছে

আগামীকাল সোমবার ১১ ফেব্রুয়ারি শোকবহ শুভ মাঘী পূর্ণিমা ।

এ শুভ মাঘী পূর্ণিমা স্মৃতি বিজড়িত একটি অনন্য পূর্ণিমা। মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধের জীবনে অনন্য এক অসাধারণ ঘটনা ঘটেছিল।

মাঘ মাসের পূর্ণিমা বলে এই পূর্ণিমা মাঘী পূর্ণিমা বলা হয়ে থাকে। মাঘী পূর্ণিমা তিথিকেও কেন্দ্র করে বুদ্ধের জীবদ্দশার স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এই পূর্ণিমার দিনেই বর্তমান ভারতের উত্তর প্রদেশের বৈশালীর চাপাল চৈত্যে বুদ্ধ নিজেই তাঁর মহাপরিনির্বাণ লাভের দিনক্ষণ ঘোষণা দেন। যাকে বৌদ্ধ পরিভাষায় বলা হয় আয়ু সংস্কার। আয়ু সংস্কারের পরিবর্তে অনেকে আয়ু বিসর্জনও বলে থাকেন। বৌদ্ধরা পুণ্যময় এই দিনকে অষ্টশীল পালন, বুদ্ধপূজা দান, সংঘদান, বিহারে ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আলোকসজ্জা, হাজার প্রদীপ প্রজ্বালন, দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত উপাসনাসহ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপন করে থাকেন।

এই দিনে বুদ্ধ নিজের মহাপরিনির্বাণ লাভের দিন ঘোষণার পাশাপাশি আরও একটি ঘটনা হলো মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধ ভিক্ষুসংঘকে প্রাতিমোক্ষ উদ্দেশ উপদেশ দিয়েছিলেন। ‘প্রাতিমোক্ষ’ হলো বৌদ্ধভিক্ষুদের নিত্যপ্রতিপালনীয় বিনয়-বিধানসংবলিত একটি গ্রন্থ। বিনয় পিটকের বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে চয়ন করে গ্রন্থ রচনা করা হয়েছে।

মাঘী পূর্ণিমা দিনে বুদ্ধ নিজের আয়ু বিসর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পেছনেও কারণ আছে। বৌদ্ধধর্মে মারের (অপশক্তি)  কথা উল্লেখ আছে। মার সব সময় বুদ্ধ শাসনের বিরুদ্ধে থাকে। কারণ, জগতে বুদ্ধ আবির্ভূত হলে মারেরা তেমন সুবিধা করতে পারে না। মার শাসন খর্ব হয়ে পড়ে। মানুষ পাপকর্মে রমিত হওয়ার চেয়ে  পুণ্যকর্মে বেশি রমিত হন। জগতে মার নামক অপশক্তি অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে না। তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তাই মার সব সময় বুদ্ধ শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সিদ্ধার্থের গৃহ ত্যাগ, বুদ্ধত্ব লাভ, বুদ্ধত্ব লাভের পরপর সব সময়ে মার বুদ্ধের পেছনে পড়ে থেকেছিল। কিন্তু তখন সুবিধা করতে পারেনি। বুদ্ধ প্রতিবার তথাগতের এখনো পরিনির্বাণ লাভের উপযুক্ত সময় হয়নি বলে কারণ দেখিয়ে মারকে ফিরিয়ে দিতেন। কিন্তু শেষবার বুদ্ধ যখন বৈশালীর চাপাল চৈত্যে অবস্থান করছিলেন, তখন মার পুনরায় বুদ্ধকে মহাপরিনির্বাণ লাভের প্রার্থনা জানালে বুদ্ধ মারের প্রার্থনা স্বীকার করে নিলেন। মারকে নিশ্চিত করলেন যে তিনি বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্ত হবেন। আয়ু বিসর্জনের সে দিনটা ছিল শুভ মাঘী পূর্ণিমা তিথি।

শেয়ার করুন
আরও সংবাদ দেখুন

You cannot copy content of this page

আগামীকাল শোকবহ শুভ মাঘী পূর্ণিমা

আপডেট সময় ০৮:৪৪:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আগামীকাল সোমবার ১১ ফেব্রুয়ারি শোকবহ শুভ মাঘী পূর্ণিমা ।

এ শুভ মাঘী পূর্ণিমা স্মৃতি বিজড়িত একটি অনন্য পূর্ণিমা। মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধের জীবনে অনন্য এক অসাধারণ ঘটনা ঘটেছিল।

মাঘ মাসের পূর্ণিমা বলে এই পূর্ণিমা মাঘী পূর্ণিমা বলা হয়ে থাকে। মাঘী পূর্ণিমা তিথিকেও কেন্দ্র করে বুদ্ধের জীবদ্দশার স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এই পূর্ণিমার দিনেই বর্তমান ভারতের উত্তর প্রদেশের বৈশালীর চাপাল চৈত্যে বুদ্ধ নিজেই তাঁর মহাপরিনির্বাণ লাভের দিনক্ষণ ঘোষণা দেন। যাকে বৌদ্ধ পরিভাষায় বলা হয় আয়ু সংস্কার। আয়ু সংস্কারের পরিবর্তে অনেকে আয়ু বিসর্জনও বলে থাকেন। বৌদ্ধরা পুণ্যময় এই দিনকে অষ্টশীল পালন, বুদ্ধপূজা দান, সংঘদান, বিহারে ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আলোকসজ্জা, হাজার প্রদীপ প্রজ্বালন, দেশ ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত উপাসনাসহ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্‌যাপন করে থাকেন।

এই দিনে বুদ্ধ নিজের মহাপরিনির্বাণ লাভের দিন ঘোষণার পাশাপাশি আরও একটি ঘটনা হলো মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধ ভিক্ষুসংঘকে প্রাতিমোক্ষ উদ্দেশ উপদেশ দিয়েছিলেন। ‘প্রাতিমোক্ষ’ হলো বৌদ্ধভিক্ষুদের নিত্যপ্রতিপালনীয় বিনয়-বিধানসংবলিত একটি গ্রন্থ। বিনয় পিটকের বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে চয়ন করে গ্রন্থ রচনা করা হয়েছে।

মাঘী পূর্ণিমা দিনে বুদ্ধ নিজের আয়ু বিসর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পেছনেও কারণ আছে। বৌদ্ধধর্মে মারের (অপশক্তি)  কথা উল্লেখ আছে। মার সব সময় বুদ্ধ শাসনের বিরুদ্ধে থাকে। কারণ, জগতে বুদ্ধ আবির্ভূত হলে মারেরা তেমন সুবিধা করতে পারে না। মার শাসন খর্ব হয়ে পড়ে। মানুষ পাপকর্মে রমিত হওয়ার চেয়ে  পুণ্যকর্মে বেশি রমিত হন। জগতে মার নামক অপশক্তি অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে না। তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তাই মার সব সময় বুদ্ধ শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সিদ্ধার্থের গৃহ ত্যাগ, বুদ্ধত্ব লাভ, বুদ্ধত্ব লাভের পরপর সব সময়ে মার বুদ্ধের পেছনে পড়ে থেকেছিল। কিন্তু তখন সুবিধা করতে পারেনি। বুদ্ধ প্রতিবার তথাগতের এখনো পরিনির্বাণ লাভের উপযুক্ত সময় হয়নি বলে কারণ দেখিয়ে মারকে ফিরিয়ে দিতেন। কিন্তু শেষবার বুদ্ধ যখন বৈশালীর চাপাল চৈত্যে অবস্থান করছিলেন, তখন মার পুনরায় বুদ্ধকে মহাপরিনির্বাণ লাভের প্রার্থনা জানালে বুদ্ধ মারের প্রার্থনা স্বীকার করে নিলেন। মারকে নিশ্চিত করলেন যে তিনি বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্ত হবেন। আয়ু বিসর্জনের সে দিনটা ছিল শুভ মাঘী পূর্ণিমা তিথি।