ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের অদূরে লা কুরনভস্থ বাংলাদেশি নিজস্ব বিহার ফ্রান্স- বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের প্রথম দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব উপলক্ষে প্যারিসের স্থানীয় টরসি মিলনায়তনে অষ্টপরিষ্কারসহ সংঘদান অনুষ্ঠিত হয়।
দানোত্তম কঠিন চীবর দান উপলক্ষে ভোর থেকে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে শীলগ্রহণ, বুদ্ধপূজা, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কল্পতরু দান, সবশেষ বহু আকাঙ্ক্ষিত কঠিন চীবর দান সহ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ফ্রান্স বুদ্ধগয়া প্রজ্ঞাবিহার ধ্যান কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ পণ্ডিতপ্রবর ভদন্ত প্রজ্ঞাবংশ মহাথের’র সভাপতিত্বে অষ্টপরিষ্কারসহ সংঘদান অনুষ্ঠানে প্রধান ধর্মদেশক ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার মহাসচিব অধ্যাপক ড. সুমেধানন্দ মহাথের, উদ্বোধক ছিলেন ফ্রান্স- বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের ভদন্ত বিজয়ানন্দ মহাথের।
সুহাস বড়ুয়া ,আদেশ বড়ুয়ার সঞ্চালনায় পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন দীপংকর বড়ুয়া ।
বিকেলে দানোত্তম কঠিন চীবর দানসভায় সভাপতিত্ব করেন ফ্রান্সস্থ শ্রীলংকান ধর্মচাক্কা বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত আনন্দ নায়ক থের। প্রধান ধর্মদেশক ছিলেন ফ্রান্স বিশ্ব শান্তি ধ্যানকেন্দ্রের অধ্যক্ষ, বিদ্যাবারিধী ড. বরসম্বোধি মহাথের, বিশেষ অতিথি ছিলেন থাইল্যান্ড থেকে আগত ড. নাগসেন মহাথের, বাংলাদেশ থেকে আগত ভদন্ত কল্যাণজ্যোতিঃ মহাথের ।
দেশনা করেন ভদন্ত অনোমোদর্শী মহাথের, ভদন্ত কল্যাণরত্ন মহাথের, ভদন্ত শাক্যবংশ থের, ভদন্ত জ্যোতিঃসার থের প্রমুখ। উদ্বোধক ছিলেন ফ্রান্স- বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের পরিচালক ভদন্ত প্রিয়রক্ষিত থের।
অনুষ্ঠান উদযাপনী কমিটির আহবায়ক সেবক বড়ুয়া ও সদস্যসচিব সুমন বড়ুয়ার সঞ্চালনায় পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন সবুজ বড়ুয়া । সাধারন সম্পাদকের প্রতিবেদন পাঠ করেন বিধান বড়ুয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুনীল বড়ুয়া সানি , শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শিলপী বড়ুয়া। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরমানন্দ বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে বসবাসরত কয়েকটি দেশের নাগরিকেরা এ উৎসবে অংশ নেন।
দেশনায় বক্তারা বলেন, বহুজনের হিত ও বহুজনের সুখের জন্য সারাবিশ্বে বুদ্ধের সদ্ধর্ম বা সত্য ধর্ম প্রচারের করতে হবে। মহামানব গৌতম বুদ্ধের অহিংস নীতির আলোকে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও সম্প্রীতিও প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
কঠিন চীবর দানের ফল বর্ণনা করতে গিয়ে দেশকেরা বলেন,কঠিন চীবর দানের ফল এতই পূন্যময় যে,তা বর্ণনা করে শেষ করে যায় না।এ দান শ্রেষ্ঠ দান।এই দানের ফলে দাতা দেবলোকে দেবব্রক্ষারূপে,মানবকূলে রাজচক্রবর্তীরূপে জন্মলাভ করেন। তাঁকে নীচকুলে জন্ম নিয়ে দুঃখ ভোগ করতে হয় না।জগতে যত রকম দান করা যায় তার মধ্যে কঠিন চীবর দানের ফল সবার উপরে। পর্বত প্রমাণ সোনা ও রূপা জাতীয় মহামূল্যবান ধাতু অথবা চুরাশি হাজার চৈত্য নির্মাণ করলেও একখানা কঠিন চীবর দানের ষোল ভাগের একভাগ পুণ্যলাভ হয় না।অসংখ্য হাতি,অশ্বতরী কিংবা মণিমুক্ত বিভুষিতা কন্যাদানের ফলও এই চীবর দানের ষোল ভাগের এক ভাগ পুণ্যলাভ হয় না।এই দানের মাধ্যমে ইহজীবনে দিব্য সুখ এবং মৃত্যুর পর সবর্গ সুখ লাভ করা যায়।