০১:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কবিয়াল ফণী বড়ুয়ার ২৪তম প্রয়াণ দিবস আজ

  • ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট সময় ০৩:১৩:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
  • ৬৭৪ বার পড়া হয়েছে

লোকসংস্কৃতি ও আধুনিক কবিগানের স্রষ্টা কবিয়াল ফণী বড়ুয়ার ২৪তম প্রয়াণ দিবস আজ ।

ফণী বড়ুয়া চট্টগ্রামের রাউজানের পাঁচখাইন গ্রামে ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নন্দকুমার বড়ুয়া এবং মাতা শ্যামা বড়ুয়া। তার শৈশবেই তিনি তার মাকে হারান।

গ্রামের বিদ্যালয়ে তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। নিজের ভরণপোষণের জন্য তিনি শ্রমণ জীবন বেঁচে নেন, কিন্তু কিছুদিন পর তিনি এই জীবন ছেড়ে বার্মা চলে যান। সেখানে তিনি রং মিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন। রেঙ্গুনে তিনি মতিলাল বড়ুয়ার কবিগান শুনে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।

তিন বছর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং জীবিকার জন্য বৌদ্ধ কীর্তন গাওয়া ও রং লাগানো কাজ করতেন। তার রং লাগানোর দোকানে তিনি টর্চ মেরামত, ঘড়ি সারানোর কাজ, ঝালাইসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতেন। এভাবেই কবিগানে ফণী বড়ুয়ার হাতেখড়ি। পরবর্তীসময়ে কবিয়াল রমেশ শীলকে গুরু হিসেবে বরণ করে কবিয়াল হওয়ার সাধনায় নিজেকে নিবেদন করেন।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ও চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে প্রচারণার অংশ হিসেবে কবিগান রচনা করায় কবিয়াল ফণী বড়ুয়ার ওপর পাকিস্তান সরকার হুলিয়া জারি করেছিল।

ফণী বড়ুয়া প্রচুর গান, কবিতাও রচনা করেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক গানও রয়েছে। তাঁর প্রকাশিত রচনাবলীর মধ্যে রয়েছে: ‘কবিগান’, ‘দেশের ডাক’, ‘হাল জমানার গান’, ‘জনতার গান’, ‘সর্বহারার জীবন সংগীত’ প্রভৃতি। তাঁর রচনায় তিনি স্বদেশ চেতনা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মার্কসবাদের প্রতি আস্থার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রথম কিশোর কবিতা সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

সংগীতে গৌরবময় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে কবিয়াল ফণী বড়ুয়া ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক অর্জন করেন। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ২২ শে জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

শেয়ার করুন
আরও সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয়

You cannot copy content of this page

কবিয়াল ফণী বড়ুয়ার ২৪তম প্রয়াণ দিবস আজ

আপডেট সময় ০৩:১৩:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

লোকসংস্কৃতি ও আধুনিক কবিগানের স্রষ্টা কবিয়াল ফণী বড়ুয়ার ২৪তম প্রয়াণ দিবস আজ ।

ফণী বড়ুয়া চট্টগ্রামের রাউজানের পাঁচখাইন গ্রামে ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নন্দকুমার বড়ুয়া এবং মাতা শ্যামা বড়ুয়া। তার শৈশবেই তিনি তার মাকে হারান।

গ্রামের বিদ্যালয়ে তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন। নিজের ভরণপোষণের জন্য তিনি শ্রমণ জীবন বেঁচে নেন, কিন্তু কিছুদিন পর তিনি এই জীবন ছেড়ে বার্মা চলে যান। সেখানে তিনি রং মিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন। রেঙ্গুনে তিনি মতিলাল বড়ুয়ার কবিগান শুনে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।

তিন বছর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং জীবিকার জন্য বৌদ্ধ কীর্তন গাওয়া ও রং লাগানো কাজ করতেন। তার রং লাগানোর দোকানে তিনি টর্চ মেরামত, ঘড়ি সারানোর কাজ, ঝালাইসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতেন। এভাবেই কবিগানে ফণী বড়ুয়ার হাতেখড়ি। পরবর্তীসময়ে কবিয়াল রমেশ শীলকে গুরু হিসেবে বরণ করে কবিয়াল হওয়ার সাধনায় নিজেকে নিবেদন করেন।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ও চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে প্রচারণার অংশ হিসেবে কবিগান রচনা করায় কবিয়াল ফণী বড়ুয়ার ওপর পাকিস্তান সরকার হুলিয়া জারি করেছিল।

ফণী বড়ুয়া প্রচুর গান, কবিতাও রচনা করেন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আঞ্চলিক গানও রয়েছে। তাঁর প্রকাশিত রচনাবলীর মধ্যে রয়েছে: ‘কবিগান’, ‘দেশের ডাক’, ‘হাল জমানার গান’, ‘জনতার গান’, ‘সর্বহারার জীবন সংগীত’ প্রভৃতি। তাঁর রচনায় তিনি স্বদেশ চেতনা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মার্কসবাদের প্রতি আস্থার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তিনি ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রথম কিশোর কবিতা সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

সংগীতে গৌরবময় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে কবিয়াল ফণী বড়ুয়া ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক অর্জন করেন। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ২২ শে জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন।