০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংঘরাজ শীলালঙ্কার মহাথের’র ১২৪তম জন্মবার্ষিকী আজ

  • ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট সময় ১২:২১:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩
  • ১০৪২ বার পড়া হয়েছে

ঊনবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সংঘমনীষা, অগ্গমহাসদ্ধম্মজ্যোতিকাধ্বজ,অগ্রমহাপণ্ডিত,সাহিত্যরত্ন অষ্টম সংঘরাজ শীলালংকার মহাথের’র ১২৪তম জন্মবার্ষিকী  আজ।

৮ম সংঘরাজ শীলালঙ্কার মহাথের চট্রগ্রামের ফটিকছড়ি থানার নানুপুর গ্রামে ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের ৭ই আষাঢ় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জয়ধন বড়ুয়া এবং মাতার নাম শ্যামাবতী বড়ুয়া। তাঁর গৃহীনাম ছিল শ্রী সহদেব বড়ুয়া। তিনি শৈশবকাল হতে ভাবুক প্রকৃতির ছিলেন। শৈশবে তাঁর পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা সচ্ছল ছিল। তিনি বাল্যকালে লেখাপড়া করার জন্য বেশ সুন্দর সুযোগও পেয়েছেন। গ্রাম্য স্কুলে প্রাথমিক লেখাপড়া শেষ করে তিনি চট্রগ্রাম শহরে জে, এম, সেন স্কুলে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। তাঁর আত্মজীবনীতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে তিনি শ্রমণ পুন্নানন্দ স্বামীলিখিত ‘রত্নমালা’ বই পরে বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তারপর থেকে তিনি প্রব্যজ্যা গ্রহণ করবার জন্য তাঁর অভিবাভকদের নিকট বেশ কয়েকবার আবেদন জানান। একসময় আকিয়াব জাতীয় বিহারের প্রধান অধ্যক্ষ অগ্গমহাপন্ডিত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত তাঁর সাক্ষাত হয়। শ্রীমৎ প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত সাক্ষাতের পর তিনি প্রব্রজ্যা গ্রহণ করবার জন্য আরো উদগ্রীব হয়ে পড়েন।

১৯২০ খ্রিস্টাব্দে অভিবাবকদের অজান্তে তিনি প্রব্রজ্যা গ্রহণের জন্য একাকী আকিয়াব যাত্রা করেন। কিন্তু এ যাত্রা তাঁর ব্যর্থ হল। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের প্রথম দিকে তিনি আবার আকিয়াব যাত্রা করেন। এই বৎসর ফেব্রুয়ারী মাসে শ্রী সহদেব বড়ুয়া আরকানী বিখ্যাত ভিক্ষু উ সুমঙ্গল স্থবিরের নিকট শ্রামন্য ধর্মে দীক্ষিত হন। তখন তাঁর নাম রাখায় হয় ‘শীলালঙ্কার’। তারপর তিনি শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত আকিয়াবে এক বনাশ্রমে ছয়মাস অতিবাহিত করে আকিয়াব শহরের জাতীয় বিহারে চলে আসেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে আরকানের সোয়েজাদি (সুবর্ণ চৈত্য) বিহার সীমায় উ তেজরাম মহাস্থবিরের উপাধ্যায়ত্বে ১৫ জন পঞ্চম সংগীতিকারক মহাস্থবিরের উপস্থিতিতে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার এবং শ্রীমৎ ধর্মতিলক একই দিনে উপসম্পদা গ্রহণ করেন। শ্রীমৎ শীলালঙ্কার ভিক্ষু শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরকে আচার্য্য হিসেবে গ্রহণ করেন। উপসম্পদা লাভের কিছুদিন পর তিনি তাঁর গুরু প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত চট্রগ্রামে আসেন। তাঁরা চট্রগ্রামে এসে মায়ানী বিহারে অবস্থান করেন। শ্রীমৎ শীলালঙ্কার ভিক্ষু মায়ানী বিহারে প্রথম বর্ষাবাস যাপন করেন। প্রথম বর্ষাবাসের পরে তিনি বিভিন্ন ধর্মসভায় শ্রীমৎ প্রজ্ঞাতিষ্য মহাস্থবির, জ্ঞানলঙ্কার মহাস্থবির, বঙ্গচন্দ্র মহাস্থবির, গিরীশচন্দ্র মহাস্থবির, বরজ্ঞান মহাস্থবির, বংশদ্বীপ মহাস্থবির, আর্য্যবংশ মহাস্থবির প্রভৃতি মহাপুরুষদের বৌদ্ধধর্ম বিনয় সম্বদ্ধে ভাষণ শুনে তিনি সদ্ধর্ম আয়ত্ত করবার জন্য বিশেষভাবে উদগ্রীব হয়ে পড়েন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার ভিক্ষু, শ্রীমৎ ধর্মতিলক ভিক্ষু এবং শ্রীমৎ জ্যোতিপাল ভিক্ষুসহ শ্রীলংকায় যাত্রা করেন। সেখানে তাঁরা পানাদুরে সদ্ধর্মোদয় পরিবেনে বদ্ধ সীমায় শ্রদ্ধেয় উপসেন মহাস্থবিরের নিকট দ্বিতীয়বর কর্মবাক্য শ্রবণ করেন এবং তাঁর নিকট ধর্মবিনয় অধ্যয়ন করে সসেখানে দু’বৎসর অতিবাহত করেন। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে তাঁরা কেন্ডির উভবর্ত নামক স্থানে সদ্ধার্মাবাস পরিবেনে শ্রদ্ধেয় পণ্ডিত ধর্মদর্শী মহাস্থবিরের নিকট আরো দু’বৎসর বৌদ্ধ ধর্ম বিনয় অধ্যয়অন করেন।১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার ভিক্ষু, রেঙ্গুনে যাত্রা করেন। সেখানে তিনি কান্দগ্লে ধর্মদুত বিহারে তাঁর গুরুদেব শ্রীমৎ প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত মিলিত হন এবং দু’মাস ধর্মদুত বিহারে অবস্থান করেন। তারপর তিনি চট্রগ্রামে এসে নানুপুরে দু’বছর অতিবাহিত করেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার মহাস্থবির কলকাতায় ধর্মাংকুর বিহারে, বিহারাধ্যক্ষ হয়ে আসেন। এসময়ে তিনি বৌদ্ধ বিষয়ক পুস্তক রচনা করতে মনোনিবেশ করেন।১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার মহাস্থবির শ্রীমৎ প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের আহ্বানে রেঙ্গুন যান। সেখানে তিনি “বৌদ্ধ মিশন”, বৌদ্ধ মিশন প্রেস এবং “সংঘ শক্তি” প্রভৃতির কার্যভার গ্রহণ করেন। দু’বছর এসব প্রতিষ্ঠানের কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করেন। তারপর তিনি চট্রগ্রামে নানুপুর আনন্দধাম বিহারে অবস্থান করেন। ১৯৩৭ খ্রি: তিনি তৃতীয়বার রেঙ্গুন যাত্রা করেন। রেঙ্গুনে তিন বছর অবস্থান করে তিনি স্বদেশে আগমন করেন। তারপর তিনি নানুপুরে ৫ বছর এবং হিঙ্গলে ৬ বছর অতিবাহিত করেন।১৯৫২ খ্রি: তিনি বৈদ্যপাড়া শাক্যমুনি বিহারে আসেন এবং সেখানে ১৫ বছর অতিবাহিত করেন। ১৯৬৭ খ্রি: বৈদ্যপাড়া হতে বিদায় নিয়ে তিনি মির্জাপুর শান্তিধাম বিহারে বিহারাধ্যক্ষ হিসেবে আসেন। ১৯৭৫ খ্রি: সাতবাড়িয়া শান্তিধাম বিহারে পরম শ্রদ্ধেয় অভয়্তিশ্য মহাস্থবিরের শবদাহ ক্রিয়া সমাপ্ত হলে ২৭শে ফেব্রয়ারী তিনি সংঘরাজ নিকায়ে সংঘনায়ক পদে অভিষিক্ত হন।

শ্রদ্ধেয় সংঘরাজ শীলালঙ্কার মহাস্থবির বৌদ্ধ ধর্ম বিষয়ক অনেক গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি বৌদ্ধ মিশন প্রেসে জরিত থেকে এবং “সংঘশক্তি পত্রিকায় সম্পাদনা করে অনেক বই প্রকাশ করেছেন”।

১৯৬৪ খ্রি: তিনি শ্রদ্ধেয় জ্ঞানশ্রী স্থবিরের সহিত মিলিত হয়ে “ত্রিপিটক প্রচার বোর্ড” প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর লিখিত গ্রন্থাবলী: রাহুল চরিত, ধর্মপদার্থকথা (যমক বর্গের অনুবাদ), অজাতশত্রু, বিমানবত্থু, জীবক, বিশাখা, আনন্দ, বুদ্ধযুগে বৌদ্ধ নারী, বৌদ্ধ নীতি মঞ্জরী, জাতকাবলী ও বাংলায় বৌদ্ধ ধর্মের ক্রমবিকাশের ধারা ইত্যাদি।

২০০০ সালের ২৩ শে মার্চ দুপুর ২.০৫ টায় মির্জাপুর শান্তিধাম বিহারে শিষ্য-সেবক, ভক্ত, অনুরাগী, দায়ক-দায়িকা এবং দেশবাসীকে শোকের সাগরে ডুবিয়ে এ মহান সংঘমনীষা মহাপ্রয়াণ লাভ করেন।

শেয়ার করুন
আরও সংবাদ দেখুন

বান্দরবানে মংশৈপ্রু পাড়া বৌদ্ধ বিহারে আগুন

You cannot copy content of this page

সংঘরাজ শীলালঙ্কার মহাথের’র ১২৪তম জন্মবার্ষিকী আজ

আপডেট সময় ১২:২১:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

ঊনবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সংঘমনীষা, অগ্গমহাসদ্ধম্মজ্যোতিকাধ্বজ,অগ্রমহাপণ্ডিত,সাহিত্যরত্ন অষ্টম সংঘরাজ শীলালংকার মহাথের’র ১২৪তম জন্মবার্ষিকী  আজ।

৮ম সংঘরাজ শীলালঙ্কার মহাথের চট্রগ্রামের ফটিকছড়ি থানার নানুপুর গ্রামে ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের ৭ই আষাঢ় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জয়ধন বড়ুয়া এবং মাতার নাম শ্যামাবতী বড়ুয়া। তাঁর গৃহীনাম ছিল শ্রী সহদেব বড়ুয়া। তিনি শৈশবকাল হতে ভাবুক প্রকৃতির ছিলেন। শৈশবে তাঁর পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা সচ্ছল ছিল। তিনি বাল্যকালে লেখাপড়া করার জন্য বেশ সুন্দর সুযোগও পেয়েছেন। গ্রাম্য স্কুলে প্রাথমিক লেখাপড়া শেষ করে তিনি চট্রগ্রাম শহরে জে, এম, সেন স্কুলে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। তাঁর আত্মজীবনীতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে তিনি শ্রমণ পুন্নানন্দ স্বামীলিখিত ‘রত্নমালা’ বই পরে বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তারপর থেকে তিনি প্রব্যজ্যা গ্রহণ করবার জন্য তাঁর অভিবাভকদের নিকট বেশ কয়েকবার আবেদন জানান। একসময় আকিয়াব জাতীয় বিহারের প্রধান অধ্যক্ষ অগ্গমহাপন্ডিত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত তাঁর সাক্ষাত হয়। শ্রীমৎ প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত সাক্ষাতের পর তিনি প্রব্রজ্যা গ্রহণ করবার জন্য আরো উদগ্রীব হয়ে পড়েন।

১৯২০ খ্রিস্টাব্দে অভিবাবকদের অজান্তে তিনি প্রব্রজ্যা গ্রহণের জন্য একাকী আকিয়াব যাত্রা করেন। কিন্তু এ যাত্রা তাঁর ব্যর্থ হল। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের প্রথম দিকে তিনি আবার আকিয়াব যাত্রা করেন। এই বৎসর ফেব্রুয়ারী মাসে শ্রী সহদেব বড়ুয়া আরকানী বিখ্যাত ভিক্ষু উ সুমঙ্গল স্থবিরের নিকট শ্রামন্য ধর্মে দীক্ষিত হন। তখন তাঁর নাম রাখায় হয় ‘শীলালঙ্কার’। তারপর তিনি শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত আকিয়াবে এক বনাশ্রমে ছয়মাস অতিবাহিত করে আকিয়াব শহরের জাতীয় বিহারে চলে আসেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে আরকানের সোয়েজাদি (সুবর্ণ চৈত্য) বিহার সীমায় উ তেজরাম মহাস্থবিরের উপাধ্যায়ত্বে ১৫ জন পঞ্চম সংগীতিকারক মহাস্থবিরের উপস্থিতিতে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার এবং শ্রীমৎ ধর্মতিলক একই দিনে উপসম্পদা গ্রহণ করেন। শ্রীমৎ শীলালঙ্কার ভিক্ষু শ্রদ্ধেয় প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরকে আচার্য্য হিসেবে গ্রহণ করেন। উপসম্পদা লাভের কিছুদিন পর তিনি তাঁর গুরু প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত চট্রগ্রামে আসেন। তাঁরা চট্রগ্রামে এসে মায়ানী বিহারে অবস্থান করেন। শ্রীমৎ শীলালঙ্কার ভিক্ষু মায়ানী বিহারে প্রথম বর্ষাবাস যাপন করেন। প্রথম বর্ষাবাসের পরে তিনি বিভিন্ন ধর্মসভায় শ্রীমৎ প্রজ্ঞাতিষ্য মহাস্থবির, জ্ঞানলঙ্কার মহাস্থবির, বঙ্গচন্দ্র মহাস্থবির, গিরীশচন্দ্র মহাস্থবির, বরজ্ঞান মহাস্থবির, বংশদ্বীপ মহাস্থবির, আর্য্যবংশ মহাস্থবির প্রভৃতি মহাপুরুষদের বৌদ্ধধর্ম বিনয় সম্বদ্ধে ভাষণ শুনে তিনি সদ্ধর্ম আয়ত্ত করবার জন্য বিশেষভাবে উদগ্রীব হয়ে পড়েন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার ভিক্ষু, শ্রীমৎ ধর্মতিলক ভিক্ষু এবং শ্রীমৎ জ্যোতিপাল ভিক্ষুসহ শ্রীলংকায় যাত্রা করেন। সেখানে তাঁরা পানাদুরে সদ্ধর্মোদয় পরিবেনে বদ্ধ সীমায় শ্রদ্ধেয় উপসেন মহাস্থবিরের নিকট দ্বিতীয়বর কর্মবাক্য শ্রবণ করেন এবং তাঁর নিকট ধর্মবিনয় অধ্যয়ন করে সসেখানে দু’বৎসর অতিবাহত করেন। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে তাঁরা কেন্ডির উভবর্ত নামক স্থানে সদ্ধার্মাবাস পরিবেনে শ্রদ্ধেয় পণ্ডিত ধর্মদর্শী মহাস্থবিরের নিকট আরো দু’বৎসর বৌদ্ধ ধর্ম বিনয় অধ্যয়অন করেন।১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার ভিক্ষু, রেঙ্গুনে যাত্রা করেন। সেখানে তিনি কান্দগ্লে ধর্মদুত বিহারে তাঁর গুরুদেব শ্রীমৎ প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের সহিত মিলিত হন এবং দু’মাস ধর্মদুত বিহারে অবস্থান করেন। তারপর তিনি চট্রগ্রামে এসে নানুপুরে দু’বছর অতিবাহিত করেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার মহাস্থবির কলকাতায় ধর্মাংকুর বিহারে, বিহারাধ্যক্ষ হয়ে আসেন। এসময়ে তিনি বৌদ্ধ বিষয়ক পুস্তক রচনা করতে মনোনিবেশ করেন।১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে শ্রীমৎ শীলালঙ্কার মহাস্থবির শ্রীমৎ প্রজ্ঞালোক মহাস্থবিরের আহ্বানে রেঙ্গুন যান। সেখানে তিনি “বৌদ্ধ মিশন”, বৌদ্ধ মিশন প্রেস এবং “সংঘ শক্তি” প্রভৃতির কার্যভার গ্রহণ করেন। দু’বছর এসব প্রতিষ্ঠানের কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করেন। তারপর তিনি চট্রগ্রামে নানুপুর আনন্দধাম বিহারে অবস্থান করেন। ১৯৩৭ খ্রি: তিনি তৃতীয়বার রেঙ্গুন যাত্রা করেন। রেঙ্গুনে তিন বছর অবস্থান করে তিনি স্বদেশে আগমন করেন। তারপর তিনি নানুপুরে ৫ বছর এবং হিঙ্গলে ৬ বছর অতিবাহিত করেন।১৯৫২ খ্রি: তিনি বৈদ্যপাড়া শাক্যমুনি বিহারে আসেন এবং সেখানে ১৫ বছর অতিবাহিত করেন। ১৯৬৭ খ্রি: বৈদ্যপাড়া হতে বিদায় নিয়ে তিনি মির্জাপুর শান্তিধাম বিহারে বিহারাধ্যক্ষ হিসেবে আসেন। ১৯৭৫ খ্রি: সাতবাড়িয়া শান্তিধাম বিহারে পরম শ্রদ্ধেয় অভয়্তিশ্য মহাস্থবিরের শবদাহ ক্রিয়া সমাপ্ত হলে ২৭শে ফেব্রয়ারী তিনি সংঘরাজ নিকায়ে সংঘনায়ক পদে অভিষিক্ত হন।

শ্রদ্ধেয় সংঘরাজ শীলালঙ্কার মহাস্থবির বৌদ্ধ ধর্ম বিষয়ক অনেক গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি বৌদ্ধ মিশন প্রেসে জরিত থেকে এবং “সংঘশক্তি পত্রিকায় সম্পাদনা করে অনেক বই প্রকাশ করেছেন”।

১৯৬৪ খ্রি: তিনি শ্রদ্ধেয় জ্ঞানশ্রী স্থবিরের সহিত মিলিত হয়ে “ত্রিপিটক প্রচার বোর্ড” প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর লিখিত গ্রন্থাবলী: রাহুল চরিত, ধর্মপদার্থকথা (যমক বর্গের অনুবাদ), অজাতশত্রু, বিমানবত্থু, জীবক, বিশাখা, আনন্দ, বুদ্ধযুগে বৌদ্ধ নারী, বৌদ্ধ নীতি মঞ্জরী, জাতকাবলী ও বাংলায় বৌদ্ধ ধর্মের ক্রমবিকাশের ধারা ইত্যাদি।

২০০০ সালের ২৩ শে মার্চ দুপুর ২.০৫ টায় মির্জাপুর শান্তিধাম বিহারে শিষ্য-সেবক, ভক্ত, অনুরাগী, দায়ক-দায়িকা এবং দেশবাসীকে শোকের সাগরে ডুবিয়ে এ মহান সংঘমনীষা মহাপ্রয়াণ লাভ করেন।