০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ বুড্ডিষ্ট বিহার অব টরেন্টো’য় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন

  • রুপায়ন বড়ুয়া
  • আপডেট সময় ০৪:০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩
  • ৯৪০ বার পড়া হয়েছে

বিগত বছরের ন্যায় ২৮শে অক্টোবর ২০২৩, ২৫৬৭ বুদ্ধাব্দ বাংলাদেশ বুড্ডিষ্ট বিহার অব টরেন্টো’য় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে। এই বিহারটি 10 Harrow Street, Mississauga, Ontario তে অবস্থিত। এই বিহারের এটি পঞ্চম প্রবারণা পূর্ণিমা। বিহারের আবাসিক ভিক্ষু শ্রীমৎ জিনপাল মহাথের এবং শ্রীমৎ ধর্মরত্ন মহাথের মহোদয় কর্তৃক প্রথমেই বুদ্ধপূজা ও পরে উপাসক-উপাসিকাদের অষ্টশীল প্রদানের মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়। বৃহত্তর টরেন্টো এবং এর আশেপাশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী বৌদ্ধরা এই মহতী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন।

থেরবাদী বৌদ্ধ বিশ্বে প্রবারণা পূর্ণিমা একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ভিক্ষুসংঘ আষাঢ়ী পূর্ণিমা হতে প্রবারণা পূর্ণিমা পর্যন্ত বর্ষাব্রত পালন করেন বিনয়সম্মত ভাবে। এই দিনে বর্ষাবাস সমাপ্ত হয় ও ভিক্ষুসংঘের মধ্যে একটি বিনয়কর্ম সম্পাদন করা হয়। ভিক্ষুরা এই দিনে একে অপরের কাছ থেকে কায়িক, মানসিক ও বাচনিক ভূলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন। থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম মতে ভগবান বুদ্ধও সপ্তম বর্ষাব্রত পালন করেন তাবতিংস স্বর্গে। এই প্রবরাণা পূর্ণিমার দিনেই তিনি মমতাময়ী মাতৃদেবীকে ধর্মজ্ঞানের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের নিমিত্তে দীর্ঘ তিনমাস অনবরত অভিধর্ম পাঠ শেষে মনুষ্যলোকের এই ধরাধামে প্রত্যাবর্তন করেন।

সিদ্ধার্থ কুমারের সাত বছর বয়সে কোন এক গাছের ছায়ায় নীরবে নির্জনে তিনি ধ্যানমগ্ন হয়েছিলেন। পিতা রাজা শুদ্ধোধন পুত্রকে আবিস্কার করলেন গভীর ধ্যানে মগ্ন মাটি থেকে ভাসমান অবস্থায়। তা দেখে তিনি পুত্রের পায়ে মাথা নত করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলেন। আশ্চর্যজনকভাবে শিশু পুত্রের এই ধ্যানমগ্ন দিনটি ছিল আজকের এই শুভ প্রবরাণা পূর্ণিমার দিন।
সম্রাট অশোকপুত্র অর্হৎ মাহেন্দ্র স্থবির সিংহল দেশে ধর্ম প্রচারকালে তখনকার রাজা দেবনাম এর রাণী অনোমাদেবী প্রব্রজিত হওয়ার মনোবাসনা প্রকাশ করলে ওখানে ভিক্ষুণীসংঘের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সম্রাট অশোককন্যা অর্হৎ সংঘমিত্রাকে সিংহলে আসার বিনীত অনুরোধ জানান। এই দিনটিই ছিল শুভ প্রবরাণা পূর্ণিমার দিন।

উল্লেখ্য যে, আগামী ৫ই নভেম্বর ২০২৩, ২৫৬৭ বুদ্ধাব্দ এই বিহারে শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান উদযাপিত হবে। এই বিহারের আবাসিক ভিক্ষু ছাড়াও বিভিন্ন দেশের স্থানীয় বৌদ্ধ বিহারগুলোর ভিক্ষুরা এই মহতী পূণ্যময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

শেয়ার করুন
আরও সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয়

সুহৃদ চৌধুরী শুধু মানুষ গড়ার কারিগর নয়, ছিলেন একজন সমাজহিতৈষী ও দক্ষ সংগঠক

You cannot copy content of this page

বাংলাদেশ বুড্ডিষ্ট বিহার অব টরেন্টো’য় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন

আপডেট সময় ০৪:০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩

বিগত বছরের ন্যায় ২৮শে অক্টোবর ২০২৩, ২৫৬৭ বুদ্ধাব্দ বাংলাদেশ বুড্ডিষ্ট বিহার অব টরেন্টো’য় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে। এই বিহারটি 10 Harrow Street, Mississauga, Ontario তে অবস্থিত। এই বিহারের এটি পঞ্চম প্রবারণা পূর্ণিমা। বিহারের আবাসিক ভিক্ষু শ্রীমৎ জিনপাল মহাথের এবং শ্রীমৎ ধর্মরত্ন মহাথের মহোদয় কর্তৃক প্রথমেই বুদ্ধপূজা ও পরে উপাসক-উপাসিকাদের অষ্টশীল প্রদানের মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়। বৃহত্তর টরেন্টো এবং এর আশেপাশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী বৌদ্ধরা এই মহতী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন।

থেরবাদী বৌদ্ধ বিশ্বে প্রবারণা পূর্ণিমা একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ভিক্ষুসংঘ আষাঢ়ী পূর্ণিমা হতে প্রবারণা পূর্ণিমা পর্যন্ত বর্ষাব্রত পালন করেন বিনয়সম্মত ভাবে। এই দিনে বর্ষাবাস সমাপ্ত হয় ও ভিক্ষুসংঘের মধ্যে একটি বিনয়কর্ম সম্পাদন করা হয়। ভিক্ষুরা এই দিনে একে অপরের কাছ থেকে কায়িক, মানসিক ও বাচনিক ভূলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন। থেরবাদ বৌদ্ধধর্ম মতে ভগবান বুদ্ধও সপ্তম বর্ষাব্রত পালন করেন তাবতিংস স্বর্গে। এই প্রবরাণা পূর্ণিমার দিনেই তিনি মমতাময়ী মাতৃদেবীকে ধর্মজ্ঞানের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের নিমিত্তে দীর্ঘ তিনমাস অনবরত অভিধর্ম পাঠ শেষে মনুষ্যলোকের এই ধরাধামে প্রত্যাবর্তন করেন।

সিদ্ধার্থ কুমারের সাত বছর বয়সে কোন এক গাছের ছায়ায় নীরবে নির্জনে তিনি ধ্যানমগ্ন হয়েছিলেন। পিতা রাজা শুদ্ধোধন পুত্রকে আবিস্কার করলেন গভীর ধ্যানে মগ্ন মাটি থেকে ভাসমান অবস্থায়। তা দেখে তিনি পুত্রের পায়ে মাথা নত করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলেন। আশ্চর্যজনকভাবে শিশু পুত্রের এই ধ্যানমগ্ন দিনটি ছিল আজকের এই শুভ প্রবরাণা পূর্ণিমার দিন।
সম্রাট অশোকপুত্র অর্হৎ মাহেন্দ্র স্থবির সিংহল দেশে ধর্ম প্রচারকালে তখনকার রাজা দেবনাম এর রাণী অনোমাদেবী প্রব্রজিত হওয়ার মনোবাসনা প্রকাশ করলে ওখানে ভিক্ষুণীসংঘের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সম্রাট অশোককন্যা অর্হৎ সংঘমিত্রাকে সিংহলে আসার বিনীত অনুরোধ জানান। এই দিনটিই ছিল শুভ প্রবরাণা পূর্ণিমার দিন।

উল্লেখ্য যে, আগামী ৫ই নভেম্বর ২০২৩, ২৫৬৭ বুদ্ধাব্দ এই বিহারে শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান উদযাপিত হবে। এই বিহারের আবাসিক ভিক্ষু ছাড়াও বিভিন্ন দেশের স্থানীয় বৌদ্ধ বিহারগুলোর ভিক্ষুরা এই মহতী পূণ্যময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।