১০:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্রিপিটকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

৯৪১. ত্রিপিটক কী?
উত্তর- বৌদ্ধদের ধর্মগ্রন্থের নাম ত্রিপিটক। ত্রিপিটক হল তিনটি পিটক বা পুস্তকের সমন্বয়। যথা- ক) বিনয় পিটক খ) সুত্ত পিটক গ) অভিধর্ম পিটক।
৯৪২. বিনয় পিটক কী?
উত্তর- বিনয় পিটক হল বৌদ্ধ ভিক্ষু-ভিক্ষুণীদের পরিশুদ্ধ জীবন গঠনের জন্য আচার-আচরণের বিধি বিধান।
৯৪৩. সুত্ত পিটক কী?
উত্তর- সুত্ত পিটক হল ভিক্ষু-গৃহী প্রব্রজিত সকল শ্রেণীর লোকের ধর্মত জীবন যাত্রার ব্যবহার পদ্ধতি ও উপদেশ।
৯৪৪. অভিধর্ম পিটক কী?
উত্তর- অভিধর্ম পিটক হল আধ্যাত্মিক বিষয়ের বিচার বিশ্লেষণ ও বৌদ্ধ মনস্তত্বের বর্ণনা। সুত্ত পিটকে যা সাধারণ ভাবে উপদিষ্ট আছে, অভিধর্ম পিটকে তা অসাধারণ ভাবে বিভাজিত, বিশ্লেষিত, আলোচিত ও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
৯৪৫. বিনয়, সূত্র ও অভিধর্ম পিটকের শিক্ষা কী কী?
উত্তর- বিনয়ের শিক্ষা উচ্চতর চরিত্র। সুত্তের শিক্ষা উচ্চতর চিন্তা। অভিধর্মের শিক্ষা উচ্চতর জ্ঞান। বিনয় আচরণকে করে মহান। সূত্র মহান ভাব জন্মায়। অভিধর্ম চিত্ত পরিশুদ্ধ করে দুশ্চরিত্রের মূলোচ্ছেদ করে।

বিনয় পিটকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

৯৪৬. বিনয় পিটকের গুরুত্ব কীরূপ?
উত্তর- বুদ্ধ শাসনের স্থিতি অকল্পনীয়। সুত্ত ও অভিধর্ম পিটক বিলু্‌প্ত হলেও যদি বিনয় পিটক বিদ্যমান থাকে, তবে বুদ্ধের ধর্ম বিলুপ্ত হবে না। কারণ, ভিক্ষুরা বুদ্ধপুত্র রূপে পরিচিত। তাই সম্মানিত ভিক্ষুদের বিনয়ের প্রতি অবহেলা না করে কঠোর সংযম ও মহান আত্মত্যাগের দ্বারা বুদ্ধের শাসন উজ্জীবিত করা সমীচিন।
৯৪৭. বিনয় পিটক কয় ভাবে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- বিনয় পিটক পাঁচখ-ে বিভক্ত। যথা- ১. পারাজিকা ২. পাচিত্তিয়া ৩. মহাবগ্গ ৪. চূলস্নবগ্গ ৫. পরিবার পাঠ।
৯৪৮. পারাজিকা ও পাচিত্তিয় গ্রন্থে কী কী আছে?
উত্তর- এতে আছে ভিক্ষুদের পালনীয় সর্বমোট ২২৭ টি শীল। যথা-
৪ প্রকার পারাজিকা। ১৩ প্রকার সাংঘাদিসেস।
২ প্রকার অনিয়ত। ৩০ প্রকার নিস্‌সগ্‌গিযা।
৯২ প্রকার পাচিত্তিযা। ৪ প্রকার পটিদেসনীযা।
৭৫ প্রকার সেখিযা। ৭ প্রকার অধিকরণ সমথ শীল।
৯৪৯. ভিক্ষুণীদের পালনীয় শীলগুলো কী কী?
উত্তর- ভিক্ষুণীদের সর্বমোট ৩১১টি শীল।
৮টি পারাজিকা।৮টি পটিদেসনীয়া।
১৭টি সংঘাদিসেস। ৭৫টি সেখিযা।
৩০টি নিস্‌সগ্‌গিযা। ৭টি অধিকরণ সমথ শীল।
১৬৬টি পাচিত্তিয।

৯৫০. পারাজিকা ও পাচিত্তিয় গ্রন্থকে আর কি নামে বলা হয়?
উত্তর- মহাবিভঙ্গ।
৯৫১. মহাবগ্গ গ্রন্থে কি আছে?
উত্তর- ভিক্ষুদের প্রতিপালনীয় ক্ষুদ্রশীলসমূহ ১০টি অধ্যায়ে বর্ণিত আছে। সেগুলো হল-

(১) (১) মহা স্কন্ধ।
(২) উপোসথ স্কন্ধ।
(৩) বস্‌সুপনায়িকা স্কন্ধ।
(৪) পবারণা স্কন্ধ।
(৫) চম্ম স্কন্ধ।
(৬) ভেসজ্জ স্কন্ধ।
(৭) কঠিন স্কন্ধ।
(৮) চীবর স্কন্ধ।
(৯) চম্পেয্য স্কন্ধ।
(১০) কোসম্বৗ স্কন্ধ।
১.
৯৫২. চুলস্নবগ্গ গ্রন্থে কি আছে?
উত্তর- ভিক্ষুদের প্রতিপালনীয় ১২টি অধ্যায়ে ক্ষুদ্রশীল সমূহ বর্ণিত আছে। সেগুলো হল-
১. ১. কর্ম স্কন্ধ।
২. পরিবাস স্কন্ধ।
৩. সমুচ্চয় স্কন্ধ।
৪. সমথ স্কন্ধ।
৫. ক্ষুদ্র বস্তু স্কন্ধ।
৬. সেনাসন স্কন্ধ।
৭. সংঘভেদক স্কন্ধ।
৮. ব্রত স্কন্ধ।
৯. প্রাতিমোক্ষ পাঠ স্কন্ধ।
১০. ভিক্ষুণী স্কন্ধ।
১১. পঞ্চশতী স্কন্ধ।
১২. সপ্তশতিকা স্কন্ধ।
১. ৯৫৩. মহাবগ্গ ও চূলস্নবগ্গ গ্রন্থকে আর কি নাম বলা হয়?
উত্তর- খন্ধক।
৯৫৪. পরিবার পাঠ গ্রন্থে কি আছে?
উত্তর- বিনয়ের বহু জটিল ও কঠিন বিনয় সমূহ অতি সহজ সুন্দর ও সংক্ষিপ্তাকারে উপস্থাপিত আছে। সেগুলো হল-
১. ১. ভিক্‌খু বিভঙ্গ।
২. ভিক্‌খুণী বিভঙ্গ।
৩. সমুট্‌ঠান সংক্ষেপ।
৪. অন্তর পেয়্যাল।
৫. সমথভেদ।
৬. খন্ধক পুচ্ছাবার।
৭. একুত্তরিকনয়।
৮. উপোসথ পুচ্ছুবিসজ্জনা।
৯. অত্থবসপকরণ।
১০. গাথাসঙ্গনিকা।
১১. অধিকরণভেদ।
১২. অপরগাথা সঙ্গনিকা।
১৩. চোদনাকন্ড।
১৪. চুলসঙ্গাম।
১৫. মহাসঙ্গহ।
১৬. কঠিনভেদ।
১৭. উপালি পঞ্চক।
১৮. অত্থপত্তি সমুট্‌ঠান।
১৯. দুতিযগাথা সঙ্গনিকা।
২০. সেদমোচন গাথা।
২১. পঞ্চগাথা।
১.
সুত্তপিটকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

৯৫৫. সুত্তপিটকের পরিচয় দাও।
উত্তর- তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের ধর্মের মূল তত্ত্বগুলোর উপদেশের সমষ্টিই হল সুত্ত পিটক (সূত্রপিটক)। শীল, সমাধি ও প্রজ্ঞানুশীলনের মাধ্যমে মানুষের দুঃখমুক্তি পথ নির্দেশনাই এসব সূত্র দেশনার মূল উদ্দেশ্য।
৯৫৬. সুত্তপিটক কয় ভাবে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- সুত্তপিটক পাঁচভাগে বিভক্ত। যথা-
১. ১. দীর্ঘনিকায়।
২. মজ্ঝিম নিকায়।
৩. সংযুক্ত নিকায়।
৪. অঙ্গুত্তর নিকায়।
৫. খুদ্দক নিকায়।
১. ৯৫৭. দীর্ঘ নিকায় কী?
উত্তর- এখানে দান, শীল, সমাধি, প্রজ্ঞা, ধ্যান, বিমোক্ষ, অনিত্য, দুঃখ, অনাত্ম, চিত্ত, চৈতসিক রূপ ও নির্বাণ এর সম্বন্ধে ভাবে আলোচিত রয়েছে।
৯৫৮. দীর্ঘ নিকায়ে কয়টি সূত্র আছে?
উত্তর- মোট ৩৪টি আছে।
৯৫৯. এগুলো কয় ভাগে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- এ সূত্রগুলি তিনভাগে বিভক্ত। যথা-
১. শীলস্কন্ধ বর্গ।
২. মহাবর্গ ও
৩. পাটিক বর্গ। এগুলো একেক বর্গে একটি পুস্তক রয়েছে।
৯৬০. মজ্ঝিম নিকায় কী?
উত্তর- এখানে বৌদ্ধ দর্শনের গুরুত্বগুলো অতি চমৎকারভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে। এর সূত্রগুলো মধ্যম সংগ্রহ বা মধ্যম পরিমাণ বিশিষ্ট নামেও পরিচিত।
৯৬১. মজ্ঝিম নিকায়ে কয়টি সূত্র আছে?
উত্তর- মোট ১৫২টি সূত্র আছে।
৯৬২. এগুলো কয়ভাগে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- এ সূত্রগুলো তিনভাগে বিভক্ত। যথা-
১. মূল পঞ্‌ঞাসক।
২. মজ্ঝিম পঞ্‌ঞাসক।
৩. সেল পঞ্‌ঞাসক। এখানে প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ডে ৫০টি করে সূত্র আছে এবং তৃতীয় খন্ডে ৫২টি সূত্র রয়েছে।
৯৬৩. সংযুক্ত নিকায় কী?
উত্তর- সংযুক্ত নিকায় সূত্র পিটকের তৃতীয় গ্রন্থ।
৯৬৪. সংযুক্ত নিকায়ে কয়টি সূত্র আছে?
উত্তর- মোট ২৮৮৯টি সূত্র আছে।
৯৬৫. এগুলি কয়ভাগে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- এ সূত্রগুলো ৫ ভাগে বিভক্ত। যথা-
১. সগাথা বর্গ।
২. নিদান বর্গ।
৩. খন্ধ বর্গ।
৪. সলায়তন বর্গ।
৫. মহাবর্গ।
১. ৯৬৬. অঙ্গুত্তর নিকায় কী?
উত্তর- অঙ্গুত্তর নিকায় সূত্র পিটকের চতুর্থ গ্রন্থ।
৯৬৭. অঙ্গুত্তর নিকায়ে কয়টি সূত্র আছে?
উত্তর- মোট ২৩০৮টি সূত্র আছে।
৯৬৮. এ সূত্রগুলো কয়ভাগে বিভক্ত?
উত্তর- এগুলি ১১টি নিপাত বা অধ্যায়ে বিভক্ত।
৯৬৯. খুদ্দক নিকায় কী?
উত্তর- এখানে ক্ষুদ্র বা ছোটখাট বিষয়ের যেমন- গল্প, জাতক, থেরথেরীর জীবন, সূত্র ইত্যাদির সমষ্টি বা সমন্বয় এই নিকায়ে নিবদ্ধ করা হয়েছে বিধায় এ নিকায়কে ক্ষুদ্দক নিকায় নামে অভিহিত হয়।
৯৭০. খুদ্দক নিকায় কয় ভাগে বিভক্ত?
উত্তর- এই খুদ্দক নিকায় আবার ১৫ খন্ডে বিভক্ত আছে। সেগুলো হল-
(১) (১) খুদ্দক পাঠ।
(২) ধম্মপদ।
(৩) উদান।
(৪) ইতিবুত্তক।
(৫) সুত্তনিপাত।
(৬) বিমানবত্থু।
(৭) প্রেত বত্থু।
(৮) থেরগাথা।
(৯) থেরীগাথা।
(১০) জাতক।
(১১) নিদ্দেশ।
(১২) পটিসম্ভিদামাগ্গ
(১৩) অপদান।
(১৪) বুদ্ধবংস।
(১৫) চরিয়া পিটক।
১.
অভিধর্ম পিটকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

৯৭১. অভিধর্ম পিটকের পরিচয় দাও।
উত্তর- সূত্র পিটকে যা সাধারণভাবে উপদিষ্ট হয়েছে, অভিধর্ম পিটকে তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সূত্র পিটকে যে ধর্ম লৌকিকভাবে দেশনা করা হয়ছে; অভিধর্মে তা অসাধারণভাবে পারমার্থিক উপায়ে আলোচিত, বিভাজিত ও ব্যাখ্যাত হয়েছে। অভিধর্ম যেমন ভাষাহীন শুধু ছেদন, বিশ্লেষণ, বিভাজন, পর্যবেক্ষণ এবং নৈর্ব্যত্তিক পরম সত্যজ্ঞানের উদ্ভাবন। সাথে সাথে চির চঞ্চল ব্যবহারিক জগতের নিরবশেষ বিলয় সাধন।
৯৭২. অভিধর্ম পিটক কয়ভাগে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- অভিধর্ম পিটক সাত ভাগে বিভক্ত। যথা-
১. ধম্ম সঙ্গনী।
২. বিভঙ্গ।
৩. ধাতুকথা।
৪. পুগ্‌গল পঞ্‌ঞতি।
৫. কথাবত্থু।
৬. যমক।
৭. পট্‌ঠান।
১. ৯৭৩. ধর্ম সঙ্গনী কী?
উত্তর- ধম্ম সঙ্গনী শব্দের মূল অর্থ ‘‘ধর্ম সংগণনা’’ অথবা ধর্মের সংক্ষিপ্ত দেশনা বলা হয়। এর মধ্যে কামলোক, রূপলোক, অরূপলোক ও নির্বাণ সম্পর্কীয় বিষয় সমূহ সুন্দরভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও সংগ্রথিত করা হয়ছে। ধম্ম সঙ্গনীকে অভিধর্ম পিটকের সারাংশও বলা হয়।
৯৭৪. নাম ও রূপকে কার্যকারণ নীতি অনুসারে ধর্ম সঙ্গনীকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর- তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. কুশল ২. অকুশল ৩. অব্যাকৃত।
৯৭৫. কুশল-অকুশল ও অব্যাকৃত ধম্ম সঙ্গনীকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর- তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. চিত্ত ও চৈতসিকের পরিচয় ২. রূপ বা জড় পদার্থের পরিচয় ৩. পূর্বোক্ত বিষয়ের সংক্ষিপ্তসার বা নিক্ষেপ।
অথবা নিম্নের চারি ভাগেও ভাগ করা যায়। যথা- ১. কুশল ধর্ম ২. অকুশল ধর্ম ৩. অব্যাকৃত ধর্ম ৪. নিক্ষেপ ।
৯৭৬. বিভঙ্গ কী?
উত্তর- এক কথায় বিভঙ্গকে ধম্ম সঙ্গনীর পরিপূরক ও ধাতু কথার ভিত্তিমূল বলা যায়।
৯৭৭. বিষয়বস্তু বিচারে বিভঙ্গকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর- তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. সুত্ত ভাজনীয়।
২. অভিধর্ম ভাজনীয়।
৩. পঞ্‌ঞাপুচ্ছক।
এদেরকে আবার ১৮ ভাগেও ভাগ করা যায়। যথা-
১. ১. পঞ্চস্কন্ধ।
২. দ্বাদশ আয়তন।
৩. অষ্টাদশ ধাতু।
৪. চার আর্যসত্য।
৫. দ্বাবিংশতি ইন্দ্রিয়।
৬. প্রতীত্য সমুৎপাদ নীতি।
৭. চারি স্মৃতিপ্রস্থান।
৮. চার সম্যক প্রধান।
৯. চার ঋদ্ধিপাদ।
১০. সপ্তবোধ্যঙ্গ।
১১. অষ্টাঙ্গিকমার্গ।
১২. ধ্যান।
১৩. চার অপ্রমেয়।
১৪. শিক্ষাপদ।
১৫. চার প্রতিসম্ভিদা।
১৬. জ্ঞান বিভঙ্গ।
১৭. ক্ষুদ্রবস্তু বিভঙ্গ (চিত্তের অকুশল অবস্থা)
১৮. ধর্ম হৃদয় বিভঙ্গ।
১. ৯৭৮. ধাতুকথা কী?
উত্তর- ধাতুকথা শব্দের অর্থ ধাতু সম্পর্কীয় কথা। কোন কোন প-িতের মতে বিষয় বস্তুর বিচারে এটাকে ধর্মসঙ্গনীর অন্তর্ভূক্ত করাই বাঞ্ছণীয়। কারণ বিভঙ্গের প্রথম তিন অধ্যায়কে ভিত্তি করে নানাদিক দিয়ে নানাভাবে নানা প্রণালীতে স্কন্ধ, আয়তন, ধাতু সম্বন্ধে প্রশ্নোত্তরচ্ছলে বৌদ্ধ অধ্যায় ব্যাপী আলোচনাই এই ধাতুকথা। এতে যোগী বা ধ্যান পরায়ণ ভিক্ষুর মানসিক বৃত্তি বা চিত্ত চৈতসিক সম্পর্কীয় আলোচনায় ভরপুর।
৯৭৯. পুগ্‌গল পঞ্‌ঞত্তি কী?
উত্তর- পুদ্গল অর্থ ব্যক্তি, পুরুষ, সত্ত্বা বা আত্মা বুঝায়। পরমার্থ সত্যানুসারে কিন্তু পুদ্গলের অসিত্মত্ব স্বীকার করা হয়না। এটা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল চিত্ত-সন্ততি মাত্র।
পঞাঞতি বা প্রজ্ঞপ্তি শব্দের অর্থ প্রজ্ঞাপনা, জ্ঞাত করা, প্রকাশ করা বা যথার্থ বলে নির্দেশ করা। সুতরাং পুদ্গল প্রজ্ঞপ্তির অর্থ দাঁড়ায়- যে পুস্তক পুদ্গল বা ব্যক্তি বিশেষের পরিচয় প্রদান করে।

শেয়ার করুন
আরও সংবাদ দেখুন

ত্রিপিটকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আপডেট সময় ০৬:১৭:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩

৯৪১. ত্রিপিটক কী?
উত্তর- বৌদ্ধদের ধর্মগ্রন্থের নাম ত্রিপিটক। ত্রিপিটক হল তিনটি পিটক বা পুস্তকের সমন্বয়। যথা- ক) বিনয় পিটক খ) সুত্ত পিটক গ) অভিধর্ম পিটক।
৯৪২. বিনয় পিটক কী?
উত্তর- বিনয় পিটক হল বৌদ্ধ ভিক্ষু-ভিক্ষুণীদের পরিশুদ্ধ জীবন গঠনের জন্য আচার-আচরণের বিধি বিধান।
৯৪৩. সুত্ত পিটক কী?
উত্তর- সুত্ত পিটক হল ভিক্ষু-গৃহী প্রব্রজিত সকল শ্রেণীর লোকের ধর্মত জীবন যাত্রার ব্যবহার পদ্ধতি ও উপদেশ।
৯৪৪. অভিধর্ম পিটক কী?
উত্তর- অভিধর্ম পিটক হল আধ্যাত্মিক বিষয়ের বিচার বিশ্লেষণ ও বৌদ্ধ মনস্তত্বের বর্ণনা। সুত্ত পিটকে যা সাধারণ ভাবে উপদিষ্ট আছে, অভিধর্ম পিটকে তা অসাধারণ ভাবে বিভাজিত, বিশ্লেষিত, আলোচিত ও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
৯৪৫. বিনয়, সূত্র ও অভিধর্ম পিটকের শিক্ষা কী কী?
উত্তর- বিনয়ের শিক্ষা উচ্চতর চরিত্র। সুত্তের শিক্ষা উচ্চতর চিন্তা। অভিধর্মের শিক্ষা উচ্চতর জ্ঞান। বিনয় আচরণকে করে মহান। সূত্র মহান ভাব জন্মায়। অভিধর্ম চিত্ত পরিশুদ্ধ করে দুশ্চরিত্রের মূলোচ্ছেদ করে।

বিনয় পিটকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

৯৪৬. বিনয় পিটকের গুরুত্ব কীরূপ?
উত্তর- বুদ্ধ শাসনের স্থিতি অকল্পনীয়। সুত্ত ও অভিধর্ম পিটক বিলু্‌প্ত হলেও যদি বিনয় পিটক বিদ্যমান থাকে, তবে বুদ্ধের ধর্ম বিলুপ্ত হবে না। কারণ, ভিক্ষুরা বুদ্ধপুত্র রূপে পরিচিত। তাই সম্মানিত ভিক্ষুদের বিনয়ের প্রতি অবহেলা না করে কঠোর সংযম ও মহান আত্মত্যাগের দ্বারা বুদ্ধের শাসন উজ্জীবিত করা সমীচিন।
৯৪৭. বিনয় পিটক কয় ভাবে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- বিনয় পিটক পাঁচখ-ে বিভক্ত। যথা- ১. পারাজিকা ২. পাচিত্তিয়া ৩. মহাবগ্গ ৪. চূলস্নবগ্গ ৫. পরিবার পাঠ।
৯৪৮. পারাজিকা ও পাচিত্তিয় গ্রন্থে কী কী আছে?
উত্তর- এতে আছে ভিক্ষুদের পালনীয় সর্বমোট ২২৭ টি শীল। যথা-
৪ প্রকার পারাজিকা। ১৩ প্রকার সাংঘাদিসেস।
২ প্রকার অনিয়ত। ৩০ প্রকার নিস্‌সগ্‌গিযা।
৯২ প্রকার পাচিত্তিযা। ৪ প্রকার পটিদেসনীযা।
৭৫ প্রকার সেখিযা। ৭ প্রকার অধিকরণ সমথ শীল।
৯৪৯. ভিক্ষুণীদের পালনীয় শীলগুলো কী কী?
উত্তর- ভিক্ষুণীদের সর্বমোট ৩১১টি শীল।
৮টি পারাজিকা।৮টি পটিদেসনীয়া।
১৭টি সংঘাদিসেস। ৭৫টি সেখিযা।
৩০টি নিস্‌সগ্‌গিযা। ৭টি অধিকরণ সমথ শীল।
১৬৬টি পাচিত্তিয।

৯৫০. পারাজিকা ও পাচিত্তিয় গ্রন্থকে আর কি নামে বলা হয়?
উত্তর- মহাবিভঙ্গ।
৯৫১. মহাবগ্গ গ্রন্থে কি আছে?
উত্তর- ভিক্ষুদের প্রতিপালনীয় ক্ষুদ্রশীলসমূহ ১০টি অধ্যায়ে বর্ণিত আছে। সেগুলো হল-

(১) (১) মহা স্কন্ধ।
(২) উপোসথ স্কন্ধ।
(৩) বস্‌সুপনায়িকা স্কন্ধ।
(৪) পবারণা স্কন্ধ।
(৫) চম্ম স্কন্ধ।
(৬) ভেসজ্জ স্কন্ধ।
(৭) কঠিন স্কন্ধ।
(৮) চীবর স্কন্ধ।
(৯) চম্পেয্য স্কন্ধ।
(১০) কোসম্বৗ স্কন্ধ।
১.
৯৫২. চুলস্নবগ্গ গ্রন্থে কি আছে?
উত্তর- ভিক্ষুদের প্রতিপালনীয় ১২টি অধ্যায়ে ক্ষুদ্রশীল সমূহ বর্ণিত আছে। সেগুলো হল-
১. ১. কর্ম স্কন্ধ।
২. পরিবাস স্কন্ধ।
৩. সমুচ্চয় স্কন্ধ।
৪. সমথ স্কন্ধ।
৫. ক্ষুদ্র বস্তু স্কন্ধ।
৬. সেনাসন স্কন্ধ।
৭. সংঘভেদক স্কন্ধ।
৮. ব্রত স্কন্ধ।
৯. প্রাতিমোক্ষ পাঠ স্কন্ধ।
১০. ভিক্ষুণী স্কন্ধ।
১১. পঞ্চশতী স্কন্ধ।
১২. সপ্তশতিকা স্কন্ধ।
১. ৯৫৩. মহাবগ্গ ও চূলস্নবগ্গ গ্রন্থকে আর কি নাম বলা হয়?
উত্তর- খন্ধক।
৯৫৪. পরিবার পাঠ গ্রন্থে কি আছে?
উত্তর- বিনয়ের বহু জটিল ও কঠিন বিনয় সমূহ অতি সহজ সুন্দর ও সংক্ষিপ্তাকারে উপস্থাপিত আছে। সেগুলো হল-
১. ১. ভিক্‌খু বিভঙ্গ।
২. ভিক্‌খুণী বিভঙ্গ।
৩. সমুট্‌ঠান সংক্ষেপ।
৪. অন্তর পেয়্যাল।
৫. সমথভেদ।
৬. খন্ধক পুচ্ছাবার।
৭. একুত্তরিকনয়।
৮. উপোসথ পুচ্ছুবিসজ্জনা।
৯. অত্থবসপকরণ।
১০. গাথাসঙ্গনিকা।
১১. অধিকরণভেদ।
১২. অপরগাথা সঙ্গনিকা।
১৩. চোদনাকন্ড।
১৪. চুলসঙ্গাম।
১৫. মহাসঙ্গহ।
১৬. কঠিনভেদ।
১৭. উপালি পঞ্চক।
১৮. অত্থপত্তি সমুট্‌ঠান।
১৯. দুতিযগাথা সঙ্গনিকা।
২০. সেদমোচন গাথা।
২১. পঞ্চগাথা।
১.
সুত্তপিটকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

৯৫৫. সুত্তপিটকের পরিচয় দাও।
উত্তর- তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের ধর্মের মূল তত্ত্বগুলোর উপদেশের সমষ্টিই হল সুত্ত পিটক (সূত্রপিটক)। শীল, সমাধি ও প্রজ্ঞানুশীলনের মাধ্যমে মানুষের দুঃখমুক্তি পথ নির্দেশনাই এসব সূত্র দেশনার মূল উদ্দেশ্য।
৯৫৬. সুত্তপিটক কয় ভাবে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- সুত্তপিটক পাঁচভাগে বিভক্ত। যথা-
১. ১. দীর্ঘনিকায়।
২. মজ্ঝিম নিকায়।
৩. সংযুক্ত নিকায়।
৪. অঙ্গুত্তর নিকায়।
৫. খুদ্দক নিকায়।
১. ৯৫৭. দীর্ঘ নিকায় কী?
উত্তর- এখানে দান, শীল, সমাধি, প্রজ্ঞা, ধ্যান, বিমোক্ষ, অনিত্য, দুঃখ, অনাত্ম, চিত্ত, চৈতসিক রূপ ও নির্বাণ এর সম্বন্ধে ভাবে আলোচিত রয়েছে।
৯৫৮. দীর্ঘ নিকায়ে কয়টি সূত্র আছে?
উত্তর- মোট ৩৪টি আছে।
৯৫৯. এগুলো কয় ভাগে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- এ সূত্রগুলি তিনভাগে বিভক্ত। যথা-
১. শীলস্কন্ধ বর্গ।
২. মহাবর্গ ও
৩. পাটিক বর্গ। এগুলো একেক বর্গে একটি পুস্তক রয়েছে।
৯৬০. মজ্ঝিম নিকায় কী?
উত্তর- এখানে বৌদ্ধ দর্শনের গুরুত্বগুলো অতি চমৎকারভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে। এর সূত্রগুলো মধ্যম সংগ্রহ বা মধ্যম পরিমাণ বিশিষ্ট নামেও পরিচিত।
৯৬১. মজ্ঝিম নিকায়ে কয়টি সূত্র আছে?
উত্তর- মোট ১৫২টি সূত্র আছে।
৯৬২. এগুলো কয়ভাগে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- এ সূত্রগুলো তিনভাগে বিভক্ত। যথা-
১. মূল পঞ্‌ঞাসক।
২. মজ্ঝিম পঞ্‌ঞাসক।
৩. সেল পঞ্‌ঞাসক। এখানে প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ডে ৫০টি করে সূত্র আছে এবং তৃতীয় খন্ডে ৫২টি সূত্র রয়েছে।
৯৬৩. সংযুক্ত নিকায় কী?
উত্তর- সংযুক্ত নিকায় সূত্র পিটকের তৃতীয় গ্রন্থ।
৯৬৪. সংযুক্ত নিকায়ে কয়টি সূত্র আছে?
উত্তর- মোট ২৮৮৯টি সূত্র আছে।
৯৬৫. এগুলি কয়ভাগে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- এ সূত্রগুলো ৫ ভাগে বিভক্ত। যথা-
১. সগাথা বর্গ।
২. নিদান বর্গ।
৩. খন্ধ বর্গ।
৪. সলায়তন বর্গ।
৫. মহাবর্গ।
১. ৯৬৬. অঙ্গুত্তর নিকায় কী?
উত্তর- অঙ্গুত্তর নিকায় সূত্র পিটকের চতুর্থ গ্রন্থ।
৯৬৭. অঙ্গুত্তর নিকায়ে কয়টি সূত্র আছে?
উত্তর- মোট ২৩০৮টি সূত্র আছে।
৯৬৮. এ সূত্রগুলো কয়ভাগে বিভক্ত?
উত্তর- এগুলি ১১টি নিপাত বা অধ্যায়ে বিভক্ত।
৯৬৯. খুদ্দক নিকায় কী?
উত্তর- এখানে ক্ষুদ্র বা ছোটখাট বিষয়ের যেমন- গল্প, জাতক, থেরথেরীর জীবন, সূত্র ইত্যাদির সমষ্টি বা সমন্বয় এই নিকায়ে নিবদ্ধ করা হয়েছে বিধায় এ নিকায়কে ক্ষুদ্দক নিকায় নামে অভিহিত হয়।
৯৭০. খুদ্দক নিকায় কয় ভাগে বিভক্ত?
উত্তর- এই খুদ্দক নিকায় আবার ১৫ খন্ডে বিভক্ত আছে। সেগুলো হল-
(১) (১) খুদ্দক পাঠ।
(২) ধম্মপদ।
(৩) উদান।
(৪) ইতিবুত্তক।
(৫) সুত্তনিপাত।
(৬) বিমানবত্থু।
(৭) প্রেত বত্থু।
(৮) থেরগাথা।
(৯) থেরীগাথা।
(১০) জাতক।
(১১) নিদ্দেশ।
(১২) পটিসম্ভিদামাগ্গ
(১৩) অপদান।
(১৪) বুদ্ধবংস।
(১৫) চরিয়া পিটক।
১.
অভিধর্ম পিটকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

৯৭১. অভিধর্ম পিটকের পরিচয় দাও।
উত্তর- সূত্র পিটকে যা সাধারণভাবে উপদিষ্ট হয়েছে, অভিধর্ম পিটকে তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সূত্র পিটকে যে ধর্ম লৌকিকভাবে দেশনা করা হয়ছে; অভিধর্মে তা অসাধারণভাবে পারমার্থিক উপায়ে আলোচিত, বিভাজিত ও ব্যাখ্যাত হয়েছে। অভিধর্ম যেমন ভাষাহীন শুধু ছেদন, বিশ্লেষণ, বিভাজন, পর্যবেক্ষণ এবং নৈর্ব্যত্তিক পরম সত্যজ্ঞানের উদ্ভাবন। সাথে সাথে চির চঞ্চল ব্যবহারিক জগতের নিরবশেষ বিলয় সাধন।
৯৭২. অভিধর্ম পিটক কয়ভাগে বিভক্ত ও কী কী?
উত্তর- অভিধর্ম পিটক সাত ভাগে বিভক্ত। যথা-
১. ধম্ম সঙ্গনী।
২. বিভঙ্গ।
৩. ধাতুকথা।
৪. পুগ্‌গল পঞ্‌ঞতি।
৫. কথাবত্থু।
৬. যমক।
৭. পট্‌ঠান।
১. ৯৭৩. ধর্ম সঙ্গনী কী?
উত্তর- ধম্ম সঙ্গনী শব্দের মূল অর্থ ‘‘ধর্ম সংগণনা’’ অথবা ধর্মের সংক্ষিপ্ত দেশনা বলা হয়। এর মধ্যে কামলোক, রূপলোক, অরূপলোক ও নির্বাণ সম্পর্কীয় বিষয় সমূহ সুন্দরভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও সংগ্রথিত করা হয়ছে। ধম্ম সঙ্গনীকে অভিধর্ম পিটকের সারাংশও বলা হয়।
৯৭৪. নাম ও রূপকে কার্যকারণ নীতি অনুসারে ধর্ম সঙ্গনীকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর- তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. কুশল ২. অকুশল ৩. অব্যাকৃত।
৯৭৫. কুশল-অকুশল ও অব্যাকৃত ধম্ম সঙ্গনীকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর- তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. চিত্ত ও চৈতসিকের পরিচয় ২. রূপ বা জড় পদার্থের পরিচয় ৩. পূর্বোক্ত বিষয়ের সংক্ষিপ্তসার বা নিক্ষেপ।
অথবা নিম্নের চারি ভাগেও ভাগ করা যায়। যথা- ১. কুশল ধর্ম ২. অকুশল ধর্ম ৩. অব্যাকৃত ধর্ম ৪. নিক্ষেপ ।
৯৭৬. বিভঙ্গ কী?
উত্তর- এক কথায় বিভঙ্গকে ধম্ম সঙ্গনীর পরিপূরক ও ধাতু কথার ভিত্তিমূল বলা যায়।
৯৭৭. বিষয়বস্তু বিচারে বিভঙ্গকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর- তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. সুত্ত ভাজনীয়।
২. অভিধর্ম ভাজনীয়।
৩. পঞ্‌ঞাপুচ্ছক।
এদেরকে আবার ১৮ ভাগেও ভাগ করা যায়। যথা-
১. ১. পঞ্চস্কন্ধ।
২. দ্বাদশ আয়তন।
৩. অষ্টাদশ ধাতু।
৪. চার আর্যসত্য।
৫. দ্বাবিংশতি ইন্দ্রিয়।
৬. প্রতীত্য সমুৎপাদ নীতি।
৭. চারি স্মৃতিপ্রস্থান।
৮. চার সম্যক প্রধান।
৯. চার ঋদ্ধিপাদ।
১০. সপ্তবোধ্যঙ্গ।
১১. অষ্টাঙ্গিকমার্গ।
১২. ধ্যান।
১৩. চার অপ্রমেয়।
১৪. শিক্ষাপদ।
১৫. চার প্রতিসম্ভিদা।
১৬. জ্ঞান বিভঙ্গ।
১৭. ক্ষুদ্রবস্তু বিভঙ্গ (চিত্তের অকুশল অবস্থা)
১৮. ধর্ম হৃদয় বিভঙ্গ।
১. ৯৭৮. ধাতুকথা কী?
উত্তর- ধাতুকথা শব্দের অর্থ ধাতু সম্পর্কীয় কথা। কোন কোন প-িতের মতে বিষয় বস্তুর বিচারে এটাকে ধর্মসঙ্গনীর অন্তর্ভূক্ত করাই বাঞ্ছণীয়। কারণ বিভঙ্গের প্রথম তিন অধ্যায়কে ভিত্তি করে নানাদিক দিয়ে নানাভাবে নানা প্রণালীতে স্কন্ধ, আয়তন, ধাতু সম্বন্ধে প্রশ্নোত্তরচ্ছলে বৌদ্ধ অধ্যায় ব্যাপী আলোচনাই এই ধাতুকথা। এতে যোগী বা ধ্যান পরায়ণ ভিক্ষুর মানসিক বৃত্তি বা চিত্ত চৈতসিক সম্পর্কীয় আলোচনায় ভরপুর।
৯৭৯. পুগ্‌গল পঞ্‌ঞত্তি কী?
উত্তর- পুদ্গল অর্থ ব্যক্তি, পুরুষ, সত্ত্বা বা আত্মা বুঝায়। পরমার্থ সত্যানুসারে কিন্তু পুদ্গলের অসিত্মত্ব স্বীকার করা হয়না। এটা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল চিত্ত-সন্ততি মাত্র।
পঞাঞতি বা প্রজ্ঞপ্তি শব্দের অর্থ প্রজ্ঞাপনা, জ্ঞাত করা, প্রকাশ করা বা যথার্থ বলে নির্দেশ করা। সুতরাং পুদ্গল প্রজ্ঞপ্তির অর্থ দাঁড়ায়- যে পুস্তক পুদ্গল বা ব্যক্তি বিশেষের পরিচয় প্রদান করে।