আগামীকাল (২৮ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার শুভ মধু পূর্ণিমা।
আমাদের জন্য একটি তাৎপর্যময় তিথি। মহান আদর্শিক পুরুষ তথাগত বুদ্ধের জীবনের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা এই পূর্ণিমার পটভূমিকায় রয়েছে বিধায় আমাদের নিকট দিনটির গুরুত্ব অপরিসীম।
মহামতি গৌতম বুদ্ধ এক সময়ে ভিক্ষু সংঘসহ কোশাম্বী (ভারত) অবস্থান করছিলেন। সেখানে বিনয়ধর ও সুত্রধর নামক দুজন ভিক্ষুর মধ্যে বিনয় সম্পর্কিত একটি বিষয় নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরে উভয় ভিক্ষুর অনুসারীদের মধ্যে সে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে, এবং এক পর্যায়ে তা চরম আকার ধারণ করে। বুদ্ধ এ বিরোধ মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু উভয় পক্ষের অনঢ় অবস্থানের কারণে কোন সমাধানে পৌঁছা সম্ভব না হলে বুদ্ধ ভীষণভাবে ব্যথিত হন। পরে বুদ্ধ তাদের ছেড়ে পারিল্যেয় নামক এক বনে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং বর্ষাব্রত পালন শুরু করেন। বনে বর্ষাবাস পালনকালে একটি হাতি প্রতিদিন বুদ্ধের আহার্য হিসেবে ফলমূল আহরণ করে বুদ্ধকে দান দিত। হাতির এ দানকার্য দেখে একটি বানরেরও দান দেয়ার ইচ্ছা জাগ্রত হয়। সেই মনোবাসনা থেকে ভাদ্র পূর্ণিমার দিন বুদ্ধকে একটি মৌচাক দান করে বানর। কিন্তু মৌচাকে মৌমাছির ছানা ও ডিম থাকায় বুদ্ধ মৌচাক থেকে মধু পান করেননি। বানর ব্যাপারটা বুঝতে পারে এবং মৌচাকটি কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে তা থেকে মৌমাছির ছানা ও ডিম পরিস্কার করে পুনরায় বুদ্ধকে দান করেন। এবার বুদ্ধ মধু পান করেন। এতে বানর খুবই আনন্দিত হয় এবং খুশীতে গাছে গাছে লাফাতে থাকে। এক পর্যায়ে অসাবধানবশতঃ গাছের শাখা থেকে নীচে পড়ে যায়।
এতে সাথে সাথে বানরটির মৃত্যু ঘটে। কিন্তু মৃত্যুর পূর্বে এই দানীয় চেতনার উদ্ভব হয়েছিল বলে বানরের ঊর্ধ্বলোকে জন্ম হয় এবং কারো কারো মতে স্বর্গলাভ করে।
দেশের সকল বিহারে ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও নানা অনুষ্ঠানমালায় বুদ্ধপূজা, প্রদীপ, ধূপপূজা, ভিক্ষুকে আহার্য দান, ধর্মীয় সভা ও বুদ্ধ-কীর্তন পরিবেশিত হবে।