০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু লাঞ্চিত: সর্বসাধারণের নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়

  • ডেস্ক রিপোর্ট :
  • আপডেট সময় ০৬:২৬:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
  • ১২১০ বার পড়া হয়েছে

শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় স্বীকৃতি স্বরূপ একুশে পদক পাওয়া  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পালি বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান  অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু লাঞ্চিত হয়েছেন।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির কতিপয় নেতার দ্ধারা চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হন।

এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছেন ভুক্তভোগী অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু।

শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে  দেখা গেছে বৌদ্ধ সমিতির মহাসচিব সুদীপ বড়ুয়া ও ধর্মীয় সচিব শশীভুষন বড়ুয়ার নেতৃত্বে জুতা দিয়ে একুশে পদক পাওয়া ড. জিনবোধি ভিক্ষুকে আঘাত করতে দেখা গেছে।

অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু  তথাগত অনলাইনকে  বলেন, ‘অবৈধ, অনির্বাচিত এবং বৌদ্ধবিহার জালিয়াতকারী ওরা। হাইকোর্ট থেকে জজকোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাদের অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। আমরা গুরুপূজার আয়োজন করি। এ বৌদ্ধ বিহারের আমি উপাধ্যক্ষ। ওরা কাউকে বিহারে ঢুকতে দিচ্ছে না। ওই সময়ে জনৈক রেখা বড়ুয়া নামে একজন আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে নেয়। পুলিশ নিয়ে যখন গিয়েছে তখন মোবাইল ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে।’

বিশিষ্ট আইনজীবি ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, চট্টগ্রামে বৌদ্ধ সমিতির নাম করে একশ্রেণীর নব্য ধনীদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের ঘাটিতে পরিণত হয়েছে কিছু কিছু বৌদ্ধ মন্দির। আজ নন্দন কানন বৌদ্ধ মন্দিরের উপাধ্যক্ষ ডঃ জিনোবোধি ভিক্ষুকে হামলা করা হয়েছে, তাকে মন্দিরে অনুষ্ঠান পালন করতে বাধা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় বৌদ্ধরা এসে তাকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করেন বলে তিনি ফোনে জানিয়েছেন।

ইতিপূর্বে মন্দিরে জায়গা দখল করার চক্রান্ত হিসেবে বিএস রেকর্ডে মন্দিরের সম্পত্তি বৌদ্ধ সমিতির নামে রেকর্ড করানোর কারণে তা সংশোধনের জন্য দেওয়ানি মামলা করলে আদালতে মন্দিরের পক্ষে রায় দেন এবং বৌদ্ধ সমিতি নন্দন কানন বৌদ্ধ মন্দিরের কেউ নন বলে রায় দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাতেও হেরে যায় বৌদ্ধ সমিতি। বর্তমানে আপীল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিভিশন দায়ের করেছে বৌদ্ধ সমিতি যা শুনানির অপেক্ষায় আছে।
মন্দিরে ভিক্ষু সংঘ যেকোন প্রকারের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা নেই। অথচ বৌদ্ধ সমিতির নাম করে এরা গুন্ডামি করে যাচ্ছে। প্রশাসন যদি সক্রিয় থাকতো তাহলে আজ এই অনভিপ্রেত পরিস্থিতি সৃষ্টি হত না। স্থানীয় কোতোয়ালি থানার ওসি বৌদ্ধ সমিতির লোকজন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে বলে অভিযোগ আছে।

এদিকে  চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে অধ্যাপক ড. জিনবোধি মহাথেরো (একুশে পদকে ভূষিত) মহোদয়ের উপর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ ও ঘটনার অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রতিবাদ ও  তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার মহাসচিব ড. সংঘপ্রিয় মহাথের। বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, একজন সংঘ সদস্যের উপর এরুপ আঘাত ও হামলা বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা কোন কারণেই প্রশ্রয় বা বরদাস্ত করবে না।

তিনি  বিজ্ঞপ্তিতে লেখেন, এই বিহারের বিভিন্ন ঘটনাকে ভিত্তি করে আদালতে মামলা চলমান, তাই আইনি বিষয় আইনিভাবে সমাধান হউক। মধ্যেখানে এরকম অনভিপ্রেত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা কারো কাম্য নয়। তাই সংশ্লিষ্ট সবাইকে কোনপ্রকার অশোভন আচরণ ও হাতাহাতি, মারামারির মত ঘটনা থেকে বিরত থাকার আহবান জানা্ন।

এ ঘটনার পর থেকে সর্বসাধারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার দুপুর ২ টায় চট্টগ্রাম নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহার থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত মানববন্ধনের কর্মসূচি দিয়েছে

শেয়ার করুন
আরও সংবাদ দেখুন

সৈয়দবাড়ী ধর্ম প্রবর্তন বৌদ্ধ বিহার দ্বিতীয় ভবনের দ্বারোদ্‌ঘাটন , কর্মবীর করুণাশ্রী থের’র “মহাথের বরণ” ১৯ , ২০ ডিসেম্বর

You cannot copy content of this page

অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু লাঞ্চিত: সর্বসাধারণের নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড়

আপডেট সময় ০৬:২৬:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪

শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় স্বীকৃতি স্বরূপ একুশে পদক পাওয়া  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পালি বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান  অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু লাঞ্চিত হয়েছেন।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির কতিপয় নেতার দ্ধারা চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হন।

এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছেন ভুক্তভোগী অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু।

শুক্রবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে  দেখা গেছে বৌদ্ধ সমিতির মহাসচিব সুদীপ বড়ুয়া ও ধর্মীয় সচিব শশীভুষন বড়ুয়ার নেতৃত্বে জুতা দিয়ে একুশে পদক পাওয়া ড. জিনবোধি ভিক্ষুকে আঘাত করতে দেখা গেছে।

অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু  তথাগত অনলাইনকে  বলেন, ‘অবৈধ, অনির্বাচিত এবং বৌদ্ধবিহার জালিয়াতকারী ওরা। হাইকোর্ট থেকে জজকোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাদের অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। আমরা গুরুপূজার আয়োজন করি। এ বৌদ্ধ বিহারের আমি উপাধ্যক্ষ। ওরা কাউকে বিহারে ঢুকতে দিচ্ছে না। ওই সময়ে জনৈক রেখা বড়ুয়া নামে একজন আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে নেয়। পুলিশ নিয়ে যখন গিয়েছে তখন মোবাইল ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে।’

বিশিষ্ট আইনজীবি ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, চট্টগ্রামে বৌদ্ধ সমিতির নাম করে একশ্রেণীর নব্য ধনীদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের ঘাটিতে পরিণত হয়েছে কিছু কিছু বৌদ্ধ মন্দির। আজ নন্দন কানন বৌদ্ধ মন্দিরের উপাধ্যক্ষ ডঃ জিনোবোধি ভিক্ষুকে হামলা করা হয়েছে, তাকে মন্দিরে অনুষ্ঠান পালন করতে বাধা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় বৌদ্ধরা এসে তাকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করেন বলে তিনি ফোনে জানিয়েছেন।

ইতিপূর্বে মন্দিরে জায়গা দখল করার চক্রান্ত হিসেবে বিএস রেকর্ডে মন্দিরের সম্পত্তি বৌদ্ধ সমিতির নামে রেকর্ড করানোর কারণে তা সংশোধনের জন্য দেওয়ানি মামলা করলে আদালতে মন্দিরের পক্ষে রায় দেন এবং বৌদ্ধ সমিতি নন্দন কানন বৌদ্ধ মন্দিরের কেউ নন বলে রায় দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাতেও হেরে যায় বৌদ্ধ সমিতি। বর্তমানে আপীল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিভিশন দায়ের করেছে বৌদ্ধ সমিতি যা শুনানির অপেক্ষায় আছে।
মন্দিরে ভিক্ষু সংঘ যেকোন প্রকারের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা নেই। অথচ বৌদ্ধ সমিতির নাম করে এরা গুন্ডামি করে যাচ্ছে। প্রশাসন যদি সক্রিয় থাকতো তাহলে আজ এই অনভিপ্রেত পরিস্থিতি সৃষ্টি হত না। স্থানীয় কোতোয়ালি থানার ওসি বৌদ্ধ সমিতির লোকজন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে বলে অভিযোগ আছে।

এদিকে  চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারে অধ্যাপক ড. জিনবোধি মহাথেরো (একুশে পদকে ভূষিত) মহোদয়ের উপর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ ও ঘটনার অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রতিবাদ ও  তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার মহাসচিব ড. সংঘপ্রিয় মহাথের। বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, একজন সংঘ সদস্যের উপর এরুপ আঘাত ও হামলা বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা কোন কারণেই প্রশ্রয় বা বরদাস্ত করবে না।

তিনি  বিজ্ঞপ্তিতে লেখেন, এই বিহারের বিভিন্ন ঘটনাকে ভিত্তি করে আদালতে মামলা চলমান, তাই আইনি বিষয় আইনিভাবে সমাধান হউক। মধ্যেখানে এরকম অনভিপ্রেত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা কারো কাম্য নয়। তাই সংশ্লিষ্ট সবাইকে কোনপ্রকার অশোভন আচরণ ও হাতাহাতি, মারামারির মত ঘটনা থেকে বিরত থাকার আহবান জানা্ন।

এ ঘটনার পর থেকে সর্বসাধারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার দুপুর ২ টায় চট্টগ্রাম নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহার থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত মানববন্ধনের কর্মসূচি দিয়েছে